Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 3:54 am

 ‘কাগজে-কলমে’ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ছাড় পেল বিইপিসিএল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক হাজার কোটি টাকার শুল্ক ছাড় দেয়া হয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিইপিসিএল)। এ কোম্পানিটি ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। গত বৃহস্পতিবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।

১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প আইনের ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই ছাড় দেয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রকল্পে আর্থিক দলিল ও চুক্তির বিপরীতে আরোপ করা স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ১ হাজার ২৩ কোটি ৭২ লাখ ২০ হাজার ৬১৮ টাকা মওকুফ করা হয়েছে।

আইআরডি সূত্রে জানা গেছে, এই কোম্পানির স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফের জন্য কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎ বিভাগের মাধ্যমে আইআরডির কাছে অনুরোধ করে বিইপিসিএল। জাতীয় স্বার্থে এবং ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এই অনুরোধ করা হয়। এর আগে অন্য কোম্পানির জন্যও এমন অনুরোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এসব অনুরোধে সাড়াও দেয় আইআরডি। কারণ, ১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প আইন মানলে ওইসব কোম্পানিকে শত শত কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে দিতে হতো।

এমন প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালে স্ট্যাম্প আইন সংশোধন করা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়, কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর স্ট্যাম্প ডিউটি যা-ই আরোপযোগ্য হোক না কেন, এর পরিমাণ কোনোভাবেই ১০ কোটি টাকার বেশি হবে না। গত ১ জুলাই থেকে নতুন সংশোধনী কার্যকর করা হয়। কিন্তু বিইপিসিএল আবেদনটি কয়েক বছর আগে করায় সেভাবেই বিভিন্ন পর্যায়ে তা অনুমোদন হয়। তাই এখন প্রজ্ঞাপনেও ওই ১ হাজার ২৩ কোটি টাকা মওকুফ করা হয়।

এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মোট ১৫টি খাতে এই শুল্ক মওকুফ করা হয়। সবচেয়ে বেশি ১৯৯ কোটি টাকা মওকুফ করা হয় মেরিন বিমা খাতে। এ ছাড়া ভূমি ভাড়া, বিমা, নিরাপত্তা, শেয়ারের চুক্তি, বিদ্যুৎ বিতরণ চুক্তি প্রভৃতি খাতেও বিপুল অর্থ মওকুফ করা হয়।

দেশে বিভিন্ন বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিকে শুল্ক-করসহ নানা ধরনের কর ছাড় দেয়া হয়। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব সুরাইয়া পারভীন বলেন, ‘জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে বড় বড় প্রকল্পে বিদ্যুৎ বিভাগের অনুরোধে আমরা স্ট্যাম্প ডিউটি মওকুফ করে থাকি। এ কোম্পানির আবেদনটি ২০২২ সালের আগে করায় সেই অনুযায়ী তাদের শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে। তাই মওকুফ করা স্ট্যাম্প ডিউটির অঙ্কটি অনেক বড় মনে হচ্ছে। আসলে সরকার মওকুফ করেছে মাত্র ১০ কোটি টাকা।