প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণকাজের অগ্রগতি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর এলাকায় প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এটি আমাদের উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। কাজের অগ্রগতি দেখে আমরা দুই পক্ষই হতাশ। যে ঠিকাদারকে আমরা নিয়োগ দিয়েছি, সে কাজটা শেষ করতে পারবে কি না? ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে কভিডের কারণেই কাজ শেষ করতে পারিনি।
এটা অযৌক্তিকভাবে ফেলে দিতে পারছি না। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এটি গ্রহণ করতে হচ্ছে। আগামী জুন পর্যন্ত সময় দেয়া আছে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি যা দেখছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেও যদি কাজ শেষ করতে পারে তাহলেও আমরা খুশি থাকব। এ ক্ষেত্রে ঠিকাদারের কোনো গাফিলতি ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। বর্ধিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। কাজের অগ্রগতি দেখার জন্য আমার সহকর্মীরা নিয়মিত এখানে আসছে। প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমরাও চাপে আছি।
২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে একমত হয় দুই পক্ষ। তখনই সিদ্ধান্ত হয়, ১৪ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপনের এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে ভারতের অনুদানে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৫১ কোটি রুপি ব্যয় হবে ভারতের। রেলপথ তৈরির মূল কাজটি করছে ভারতীয় রেলওয়ের উত্তরাঞ্চলীয় বিভাগ নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে। আগরতলা-আখাউড়া রেল চলাচল শুরু হতে সময় লাগবে তিন থেকে চার বছর।
আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলা পর্যন্ত মিটার গেজ এ রেলপথের দৈর্ঘ্য হবে ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। পরে একে ব্রড গেজে রূপান্তরিত করারও সুযোগ থাকবে। এ রেলপথ চালু হলে বাংলাদেশের আখাউড়ার সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সরাসরি রেল যোগাযোগ শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে পণ্য পরিবহন অনেক সহজ হয়ে আসবে।