তথ্যগুলো পীড়াদায়ক। কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ও রোগে ভোগার কারণে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন একজন কর্মী। প্রতি ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হন ১৫৩ কর্মী। প্রতিদিন কাজ করতে গিয়ে মারা যান প্রায় ৬ হাজার ৩০০ কর্মী। এমন ভীতিকর পরিসংখ্যানটি তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।
কর্মস্থলের নাজুক এ চিত্র সারাবিশ্বের। পেশাগত ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায় একজন কর্মক্ষম ব্যক্তি কতটা সুযোগ-সুবিধা পান, তাও প্রমাণ করে পরিসংখ্যানটি। কর্মক্ষেত্রে এ দুর্ভোগের আর্থিক ক্ষতি বিশাল। এ কারণে প্রতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির প্রায় চার শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এসব কারণে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে দুর্ঘটনা কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা আইএলও। কর্মক্ষেত্রের উন্নয়নের পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কাজ করে সংস্থাটি।
তবে আরও আগে কানাডিয়ান ইউনিয়ন অব পাবলিক এমপ্লয়িজ এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। সেখানকার শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহতদের ক্ষতিপূরণ আইন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। তাদের এ ক্ষতিপূরণ আইন কার্যকর হয় ১৯৮৪ সালের ২৮ এপ্রিল। পরে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয় আইএলও। আমরাও কর্মস্থলে আহত ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সমান ভূমিকা পালন করতে পারি।
কর্মীদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা নিয়োগকারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। আর কর্মী হিসেবে খেয়াল রাখা উচিত, তার কাজের জন্য কোনো সহকর্মী যেন বিপদে না পড়েন। একই সঙ্গে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া ও নিবৃত্তিমূলক পরিমাপক হিসেবে কর্মক্ষেত্রের উন্নতিতে অংশ নেওয়াও একজন কর্মীর অবশ্য কর্তব্য।
আমাদের দেশে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা অধিকার অবহেলিত একটি বিষয়। এ বিষয়ে আইনি নির্দেশনা থাকলেও তার প্রয়োগ উল্লেখ করার মতো নয়।
এ ঘটনাকে স্মরণীয় রাখতে কানাডিয়ান লেবার কংগ্রেস ২৮ এপ্রিলকে ‘শ্রমিক স্মরণ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। পরে ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং সমমনা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনের উদ্যোগে এ শ্রমিক স্মরণ দিবস বৈশ্বিক রূপ পায়। তখন থেকে এটি বিশ্ব পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস হিসেবে উদ্যাপন হয়ে আসছে।
Add Comment