প্রতিনিধি, কক্সবাজার: কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর স্ত্রী-সন্তানের পর এবার তার মা-সহ দুই ভাইয়ের পরিবারের ১৪ জন কানাডায় পাড়ি জমালেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তত্ত্বাবধানে মুহিবুল্লাহর পরিবারের ১৪ সদস্যকে গত রোববার ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে ঢাকায় নেয়া হয়। সোমবার রাতে তারা কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এ ১৪ জনের মধ্যে রয়েছেন নিহত মুহিবুল্লাহর মা উম্মা ফজল (৬০) এবং তার দুই ভাই হাবিব উল্লাহ, আহমাদ উল্লাহ এবং তাদের স্ত্রী ও সন্তানেরা। এর আগে গত ৩১ মার্চ মুহিবুল্লাহর স্ত্রী, ৯ ছেলেমেয়ে ও এক মেয়ের জামাইসহ পরিবারের ১১ সদস্য ইউএনএইচসিআরের তত্ত্বাবধানে কানাডায় পাড়ি দেন।
গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজারের কুতুপালং-১ (ইস্ট) লম্বাশিয়া ক্যাম্পের ডি-৮ ব্লকে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ। মিয়ানমারের মংডুতে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন বলে রোহিঙ্গাদের কাছে তিনি ‘মুহিবুল্লাহ মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মুহিবুল্লাহর স্বজন ও অনুসারীরা হন্যে হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন তারা।
গত বছরের অক্টোবরে মুহিবুল্লাহর ভাগ্নে ও আরএসপিএইচআরের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রশিদুল্লাহ বলেছিলেন, ‘মুহিবুল্লাহর স্ত্রী, সন্তান, মা, ভাইসহ স্বজনদের ১৮টি পরিবারের সদস্যরা কুতুপালং ক্যাম্পে নিরাপদ মনে করছেন না। এসব পরিবারের ৯৪ সদস্যকে বর্তমানে ক্যাম্পের বাইরে অজ্ঞাত নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। তবে তারা সেখানে থাকতেও রাজি নন।’
বাংলাদেশের বাইরে তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়ার কথা বলেছিলেন রশিদুল্লাহ। তিনি জানিয়েছিলেন, তাদের এই ইচ্ছার কথা জাতিসংঘের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় তারা জানিয়েছেন।
এরপর গত মার্চে মহিবুল্লাহর স্ত্রী নাসিমা খাতুন, ৯ ছেলেমেয়ে এবং এক মেয়ের জামাইসহ ১১ জন ইউএনএইচসিআরের তত্ত্বাবধানে কানাডায় পাড়ি দেন।