মানুষের কানের তিনটি অংশ: বহিঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ ও অন্তঃকর্ণ। কান দিয়ে যদি পুঁজ বা পানি পড়ে, তবে বুঝতে হবে এটি মধ্যকর্ণের রোগ। সাধারণ মানুষ একেই কান পাকা বলে থাকে। যেকোনো বয়সেই এটি দেখা দিতে পারে। তবে আমাদের দেশে শিশুদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। আবার শহরের মানুষের তুলনায় নানা কারণে গ্রামের মানুষের মধ্যে রোগটি বেশি হতে দেখা যায়।
কান কেন পাকে: আমাদের সবার খুলির মধ্যে ইউস্টেশিয়ান টিউব নামের একটা নল আছে, যার এক মাথা থাকে মধ্যকর্ণে, আরেক মাথা নাকের পেছনে অবস্থিত ন্যাজোফেরিংস নামক স্থানে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই নলটি খাটো, প্রশস্ত এবং একদম সোজাসুজি থাকে। তাই মায়েরা বুকের দুধ অথবা বোতলের দুধ কিংবা কোনো তরল পদার্থ খাওয়ানোর সময় শিশুদের মাথার দিকটা একটু উঁচু করে না ধরলে এই তরল কিছুটা হলেও মধ্যকর্ণে চলে যেতে পারে। এ থেকে পরে মধ্যকর্ণ সংক্রমিত হয়ে কান পাকতে পারে।
যেসব শিশুর ঘনঘন ঠান্ডা লাগে, শ্বাসতন্ত্রের ওপর দিকের সংক্রমণ বেশি হয়, বারবার টনসিলে সংক্রমণ হয়, ঘনঘন সর্দি থেকে সাইনোসাইটিস হয়, বা এডিনয়েড বড় থাকে, তাদের ক্ষেত্রে ইউস্টেশিয়ান টিউবের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা কমে যায়। এসব কারণে প্রথম দিকে হঠাৎ করে কানে প্রচণ্ড ব্যথা ও জ্বর হয় এবং এরপর কানের পর্দা ফুটো হয়ে পানি আসে। ওই সময় যথাযথ চিকিৎসা না নিলে পর্দার ছিদ্রটি স্থায়ী হয়ে যায়। পরে সংক্রমণ হলেই কান দিয়ে বারবার পানি বা পুঁজ আসতে থাকে। দীর্ঘদিন ভুগলে বড়দের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আঘাতজনিত সমস্যায় কানের পর্দা ছিদ্র হয়ে গেলে এবং তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা না নিলে পরে সর্দি, কাশি ও গলাব্যথা হলে পর্দা দুর্বল হয়ে কান দিয়ে পুঁজ বা পানি আসতে পারে। (বাকি অংশ আগামীকাল)
ডা. মো.আব্দুল হাফিজ শাফী
নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট