Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:17 am

কাবুলে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ৮০ জন নিহত  

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছে বিদেশি দূতাবাস এলাকায় বড় ধরনের একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছে। বুধবার সকালের এ বিস্ফোরণে আরও ৩৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাবুলের প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছে কূটনীতিক একালায় এ গাড়িবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে ফ্রান্স, জাপান, জার্মানি ও তুরস্কের দূতাবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। হামলাস্থলের কাছে ভারতীয় দূতাবাসেরও অবস্থান হলেও হামলায় ভারতীয় দূতাবাসের কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্সের দূতাবাস। আফগানিস্তানে অবস্থিত জার্মান দূতাবাসে একজন নিরাপত্তা রক্ষী নিহত এবং কয়েকজন কর্মকর্তা আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমা গ্যাব্রিয়েল। ইউরোপ-বিষয়ক ফরাসি মন্ত্রী মেরিলে দ্যঁ সার্নেজ এ ঘটনায় ফ্রান্স দূতাবাসের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এবং আফগানিস্তানে অবস্থিত সব ফরাসি নাগরিকদের সাবধানে থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াহিদ মোজরহ অন্য কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় ৮০ জন নিহত এবং ৩৫০ জন আহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে, কয়েকশ লোককে আহত অবস্থায় কাবুলের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণস্থল থেকে কয়েকশ মিটার দূরে ঘরবাড়ির দরজা-জানালা উড়ে গেছে। ঠিক কতজন নিহত হয়েছে তার সংখ্যা এখনই নিশ্চিত হয়ে বলা যাবে না।

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন মোহাম্মদ হাসান। বিস্ফোরণের ঘটনার সময় তিনি নিজ কর্মস্থল ব্যাংকে কাজ করছিলেন। তিনি বলেন, ‘মনে হলো ভূমিকম্প।’ বিস্ফোরণে আহত হাসানের মাথায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। কিন্তু সেটা ছাপিয়ে রক্ত পড়ে ভিজে যাচ্ছিল তার সাদা শার্ট। ২৭ বছর বয়সী নাজিব আহমেদ নামের আরেকজন ওই সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করে বলছিলেন, ‘হামলার পর সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে গেল।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কাবুলে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে। চলতি মাসের প্রথমদিকে ন্যাটো জোটের একটি সামরিক বহর কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস অতিক্রম করার সময় এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্তত আটজন বেসামরিক নিহত হন। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। গত মার্চে কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাছে একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসকের ছদ্মবেশ ধরে আসা বন্দুকধারীদের হামলায় ৪৯ জন নিহত হয়।

২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর বাকির উল উলুম নামে একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৭ জন নিহত হয়, একই বছর জুলাইতে আফগানিস্তানের দেহ মাজাং স্কয়ারে আরেক হামলায় ৮০ জন, এপ্রিলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনের পাশে বিস্ফোরণে ২৮ জন ও পয়লা ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দফতরে আত্মঘাতী হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একের পর এক হামলায় নিন্দা কুড়াচ্ছে আফগান সরকার। এতে আফগানিস্তানজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে।

এ হামলার জন্য তালেবানকে সন্দেহ করা হলেও তারা এখন পর্যন্ত এ হামলায় দায় স্বীকার করেনি।