শেয়ার বিজ ডেস্ক: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের সামরিক হাসপাতালের কাছে গুলির পর জোড়া বিস্ফোরণে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪৩ জন। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর: রয়টার্স, আল জাজিরা।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র বিলাল কারিমি ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেছেন, কাবুলের সবচেয় বড় ৪০০-শয্যাবিশিষ্ট সামরিক হাসপাতালের প্রবেশমুখে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে হতাহতের বিষয়টি স্পষ্ট করে জানাননি তিনি। কারিমি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এটি একটি গাড়ি বোমা হামলা। এ ঘটনার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি।
বিস্ফোরণ স্থল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি ট্রমা হাসপাতাল পরিচালনা করছে ইতালীয় এক দাতব্য সংস্থা। তারা বলেছে, তাদের হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে।
বিস্ফোরণের সময় হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসা একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলেছেন, তিনি প্রচণ্ড এক বিস্ফোরণের পর গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন। প্রথম বিস্ফোরণের ১০ মিনিট পর দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, শহরের ওয়াজির আকবর খান এলাকার সাবেক কূটনৈতিক ওই এলাকার বিস্ফোরণ স্থলের আকাশে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা হামলার স্থানে অন্তত দুটি হেলিকপ্টার উড়ে যেতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
তবে এ হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বখতার নিউজ এজেন্সি বলছে, হাসপাতালে বেশ কয়েকজন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) যোদ্ধা প্রবেশ করেছেন এবং সেখানে তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে।
গত আগস্টে পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তালেবানের জয়ের পর আফগানিস্তানে বোমা হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে কয়েক দশকের যুদ্ধের পর নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তালেবানের প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদে তালেবানকে লক্ষ্য করে চালানো বোমা হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারায়। তাদের মধ্যে একজন শিশুও ছিল।
গত আগস্টে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানে আইএসের হামলা-সহিংসতা বেড়ে গেছে। দেশটির নতুন শাসকগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। এতে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু নিরীহ মানুষ।
কিছুদিন আগেই পরপর দুই শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদে হামলা চালিয়েছে আইএস। এতে প্রায় ১০০ জন নিহত ও কয়েকশ’ আফগান নাগরিক আহত হয়েছেন।