কারওয়ান বাজার আড়ত মালিক সমিতির নিবন্ধন বাতিল করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক:কাঁচামালের যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নিবন্ধন বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি)।

১২ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে দেয়া এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানিয়েছেন ডিএনসিআরপি মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

নিবন্ধন বাতিলের অনুরোধ করার কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়, ১১ মার্চ কারওয়ান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচা পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাজার তদারকি করা হয়। এ সময় বাজারে কাঁচা পণ্যের সরবরাহ ও মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অনিয়ম দেখা গেছে।

এসব অনিয়মের বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করতে কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী মালিক সমিতি, সিটি করপোরেশন আড়ত ভবন (নিচতলা), কারওয়ান বাজার, ঢাকা বরাবর চিঠি দেয়া হয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান অধিদপ্তরে উপস্থিত হয়ে লিখিত বক্তব্য না দিয়ে মৌখিক বক্তব্য দেন।

ভোক্তা অধিদপ্তর মনে করছে, বাজার তদারকি করে যেসব অনিয়ম পাওয়া গেছে এবং সেগুলোর বিষয়ে তিনি যে মৌখিক বক্তব্য দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক নয়। তার বক্তব্যে বোঝা গেছে, রমজানের আগে কাঁচা পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কমিটির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি; বরং তিনি হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে অযৌক্তিক যুক্তি তুলে ধরেছেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পবিত্র রমজানসহ সারা বছর কাঁচা পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা ও যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আড়ত মালিক ব্যবসায়ী সমিতির নিবন্ধন বাতিলের অনুরোধ করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর।

কী দেখেছে ভোক্তা অধিদপ্তর

এক. রাতের বেলায় কাঁচা পণ্য (বেগুন, শসা ও লেবু) ব্যবসায়ীরা খোলা রাস্তায় এবং কোনো আড়তের আংশিক জায়গায় বিপুল পরিমাণ পণ্য অন্য পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন; কিন্তু তাদের ট্রেড লাইসেন্স নেই; দুই. সবজির আড়তদার/পাইকারি বিক্রেতারা পণ্য কেনাবেচার রসিদ ছাড়াই পণ্য কেনাবেচা করেন; তিন. আড়তদার/পাইকারি বিক্রেতারা পণ্যের মূল্য

তালিকা প্রদর্শন করেন না; চার. সবজির সরবরাহ ব্যবস্থায় উৎপাদক থেকে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ থেকে ছয়টি হাত বদলের মাধ্যমে পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছায়; পাঁচ. কারওয়ান বাজারে কাঁচামাল সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুসংখ্যক পাইকারি বিক্রেতার উপস্থিতি দেখা যায়, যাদের কোনো দোকান বা ব্যবসায়িক পরিচিতি পাওয়া যায়নি; ছয়. সরবরাহ ব্যবস্থার সব পর্যায়ে পণ্য হাত-বদলের কারণে পণ্যের মূল্য বাড়ছে বলে দেখা যায়; সাত. সবজির আড়তগুলোতে পণ্য সরবরাহ ও বিক্রয়ের জন্য প্রযোজ্য আইনকানুন মানা হয় না; আড়তের মালিক/প্রতিনিধিদের তদারকির সময় দেখা যায়নি।

ভোক্তা অধিদপ্তর মনে করছে, কাঁচা পণ্যের অবাধ সরবরাহ ও যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে এবং সংশ্লিষ্ট আইন, বিধিবিধান মেনে চলার ক্ষেত্রে আড়তদার/পাইকারি সমিতির সদিচ্ছা ও আগ্রহ নেই। সে জন্য সমিতির নিবন্ধন বাতিলের অনুরোধ করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর।

১১ মার্চ দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত ডিএনসিআরপির ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস, সহকারী পরিচালক আবদুস সালাম ও প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সোহেল চাকমাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তদারকিতে অংশ নেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০