Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 2:33 am

কারও ‘ফরমায়েশে’ বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে না: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশিদের আসতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কারও ফরমায়েশে এদেশে গণতন্ত্র চলবে না। গতকাল শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের বস্ত্র হরণকারীদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি মানায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই। এই দেশে গণতন্ত্রের যা কিছু অর্জন, সবই কিন্তু আমাদের। পঁচাত্তর-পরবর্তীকালে শৃঙ্খলিত গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করার অগ্রভাগে ছিলেন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। আমরা বলতে চাই, এই গণতন্ত্র একটা বিকাশমান প্রক্রিয়া। সময়ের পরিবর্তন যতই আসবে, শত বাধাবিপত্তির মাঝে আমাদের নেত্রী গণতন্ত্র বিকাশে আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।’

বিদেশিদের কাছে বিএনপির ‘নালিশে’ কাজ হবে না বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে বিদেশিরাও কিছু বলেননি। কারণ তাদের দেশে তত্ত্বাবধায়ক নেই। বাংলাদেশে অহেতুক কেন তত্ত্বাবধায়কের নামে বিএনপির চক্রান্তমূলক রাজনীতি? আসলে বিএনপি সরকারের উন্নয়ন অর্জনে হেরে যাবে, তারা আজকে দিশাহারা। যে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে, সেই বিদেশিরাও বিএনপির পক্ষে কিছুই বলে না। তারা যার সঙ্গে ইচ্ছা বৈঠক করুক। কিন্তু আমাদের এখানে গণতন্ত্র আমরাই চালাব। কারও ফরমায়েসে বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে না। আমরা নির্বাচন করিÑকেমন নির্বাচন করি সেজন্য পর্যবেক্ষকদের শেখ হাসিনা স্বাগত জানিয়েছেন। আমেরিকা থেকে আসুক, ইউরোপ থেকে আসুক, যেখান থেকে ইচ্ছা পর্যবেক্ষক আসুক, এখানে কোনো বাধা নেই। এখানে কারও জন্য কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।’

আওয়ামী লীগ সবসময় ষড়যন্ত্রের শিকার হয় বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা ষড়যন্ত্র করি না, কিন্তু ষড়যন্ত্রের শিকার হই। আমরা হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না, কিন্তু আমরা বারে বারে হত্যার শিকার হই। এটা হলো বাংলাদেশের বাস্তবতা।’

‘বিএনপির ঘরেই গণতন্ত্র নেই’ মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘আজকে বিএনপি কখন যে কী বলে, নিজেদের ঘরটাতে তাদের গণতন্ত্র নেই। ফখরুল সাহেব নিজেরও হয়তো মনে নেই কবে তার সম্মেলন হয়েছে। আমি তিন-তিনবার সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক হয়ে গেলাম, কিন্তু বিএনপি? ঢাকা থেকে তৃণমূলে আমাদের কয়েক হাজার সম্মেলন হয়ে গেছে, কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড ইউনিট পর্যন্ত। অথচ তাদের নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি নেই। সেই সুযোগ তাদের দলে নেই, সহযোগীদের সম্মেলন নেই, ঘরে বসে কমিটি দিচ্ছে। এই দল আবার আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্র শেখাতে আসে। ফখরুল সাহেবদের লজ্জা পাওয়া উচিত। তাদের আমলেই গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে সবচেয়ে বেশি। তাদের আমলে প্রহসনমূলক ১৫ ফেব্রুয়ারি মাগুরা মার্কা নির্বাচন, হ্যাঁ/না ভোট, যেখানে হ্যাঁ ভোটের পার্সেন্টেজ ১১৪ পার্সেন্টও হয়েছে। জিয়াউর রহমমানের হাঁ/না ভোট।’

বিএনপির আমলে ভোট নিয়ে অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সকাল ১১টার মধ্যে ভোট শেষ। তাদের আমলে এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার হয়েছে, যেজন্য ওয়ান-ইলেভেন হয়েছে। এটা অন্যতম কারণ।’

দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির উদ্যোগে আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণের এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপকমিটিতে সর্বোচ্চ ১০০ জন করে রাখার কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

এক সপ্তাহের মধ্যে উপকমিটি গঠন করার কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘উপকমিটি গঠনে খুব বড় কমিটি করলে বসতেও সমস্যা হয়। এটা ১০০ জনের মধ্যে রাখলে ভালো হয়। সর্বাধিক ১০০ জনের মধ্যে, ৯১ বা ১০১ সর্বাধিক রাখতে হবে। আমাদের তিন-চারশ কর্মী পার্টি অফিসে ঘুরছে। কাজেই উপকমিটিটা সান্ত¡নার। তারা যাবে কোথায়, একটা পরিচয় না থাকলে যাবে কোথায়?’

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা ও কেন্দ্রীয় সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু বক্তব্য দেন।