‘কারও মুখের দিকে চেয়ে বিচার করলে সুবিচার আসবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক : সুবিচারের জন্য বিচারপতিকে মটিভলেস ও স্পেশালিস্ট হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আবদুল মতিন। তিনি বলেন, ‘লোকে কী বলবে, প্রধানমন্ত্রী কী বলবেন; তাদের মুখের দিকে চেয়ে যদি বিচার করি, সুবিচার হবে না। সুবিচার অনেক সময় আইন মেনে হয় না। আইনকে ব্যাখ্যা করতে হবে এমনভাবে যেন সঠিক কাজটা হয়। আমরা যদি সজাগ ও সৎ থাকি, তবেই জাজমেন্ট ভালো হবে।’

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের এক যুগ’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক এ বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগ বরাবরই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং সব সময়ই বিরোধী দল বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলে। স্বাধীনতা যদি আপনার চরিত্রের মধ্যে না থাকে, তাহলে হাজার নিয়মনীতি থাকলেও আপনি স্বাধীন হতে পারবেন না। আমাদের চরিত্র ও অনুভূতিতে স্বাধীনতার বোধ থাকা প্রয়োজন, তবেই সত্যিকারের স্বাধীনতা আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ন্যায়বিচার মানে মনিবের আনুগত্য নয়; বরং আইনের আনুগত্য। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বার ও বেঞ্চের মধ্যে পারস্পারিক আলোচনা করা প্রয়োজন।’

সভায় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শাসন বিভাগে সম্পৃক্ত করা উচিত না। বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির মতামত প্রাধান্য পেলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খর্ব হয়। হয়তো বিচার বিভাগ হতে আমরা যতটা চাই, ততটা পাইনি। কিন্তু, স্বাধীনতার পর হতে বিচার বিভাগের অর্জন কম না।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ হচ্ছে সর্বোচ্চ আদালত। তারা যে রায় দেবেন সেটাই ফাইনাল। আর সে জন্য এসব জায়গায় যাকে নিয়োগ দেওয়া হবে অবশ্যই তার ব্যক্তিত্ব, সততা থাকতে হবে। বিচার বিভাগে এমনও অনেকে আছেন যাদের ড. কামাল, রফিকুল ইসলামের মতো সিনিয়র আইনজীবীরা কোনো রেফারেন্স দিলে, তা তারা বুঝবেন না। এ রকম কাউকে বিচার বিভাগে বসানো হলে সুষ্ঠু বিচারের আশা করবেন কীভাবে। উচ্চ ও নি¤œ আদালতে অবশ্যই মেধাসম্পন্ন, সৎ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। তাদের সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা যাবে না। তবেই সুষ্ঠু বিচারের আশা করা যেতে পারে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ডক্টর সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায়  আরও উপস্থিত ছিলেন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক জেলা জজ মাসদার হোসেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রমুখ।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০