নিজস্ব প্রতিবেদক: ১০ হাজার ২০০ স্পিন্ডলভিত্তিক রিং স্পিনিং ইউনিটসহ দ্বিতীয় ধাপে কারখানা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, মোজাফফর হোসাইন স্পিনিং মিলসের পরিচালনা পর্ষদ ১০ হাজার ২০০ স্পিন্ডলভিত্তিক রিং স্পিনিং ইউনিটের সম্প্রসারণের জন্য চূড়ান্ত করেছে। একইসঙ্গে কোম্পানিটি ২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যাপটিভ পাওয়ারও চূড়ান্ত করেছে। এই দুই প্রকল্পে কোম্পানিটির ৯০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ৯০ কোটি টাকার মধ্যে ৭০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ থেকে এবং বাকি ২০ কোটি টাকা রিজার্ভ ও কোম্পানির মুনাফা থেকে অর্থায়ন করা হবে। নতুন প্রডাকশন লাইনটিতে উচ্চমূল্যের ব্লেন্ডেড সুতা তৈরি করা হবে। নতুন প্রডাকশন লাইনের কাজ শেষে দৈনিক উৎপাদন ৮ মেট্রিক টন বাড়বে বলে কোম্পানিটি জানিয়েছে। অন্যদিকে ক্যাপটিভ পাওয়ারের মাধ্যমে কোম্পানির বিদ্যুৎ খরচ কমানো হবে। ফলে এতে সামগ্রিকভাবে উৎপাদন খরচ কম হবে।
এদিকে কোম্পানিটি তাদের চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল তিন পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ইপিএস বেড়েছে ৭০ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিক বা ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) ইপিএস হয়েছে ৯৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৯ পয়সা (লোকসান)। এছাড়া ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ১৩ পয়সা, যা ২০২১ সালের ৩০ জুনে ছিল ১৮ টাকা ১৬ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে চার টাকা ৩৩ পয়সা, অথচ আগের বছর একই সময়ে ছিল সাত টাকা ৫৪ পয়সা (লোকসান)।
আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ইপিএস বাড়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে যে, তাদের নতুন একটি রিং স্পিনিং ইউনিটের উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে রোটর ইউনিটের সম্পূর্ণ উৎপাদনক্ষমতার ব্যবহার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সুতার দর বেড়ে গেছে। যার ফলে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে।
বস্ত্র খাতের ‘বি’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৮২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১০ কোটি ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৩৭৪টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩৯ দশমিক ৬১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২১ দশমিক ০৫ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৩৯ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এদিকে ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি তিন শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫২ পয়সা এবং ২০২১ সালের ৩০ জুন তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ১৬ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির নগদ অর্থ প্রবাহ হয়েছে ১০ টাকা ৩৯ পয়সা (লোকসান)। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি এক শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ১৯ পয়সা লোকসান এবং ২০২০ সালের ৩০ জুন তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা এক পয়সা।