Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 3:45 am

কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ছে ইসলামিক ফাইন্যান্সের

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানি ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের। সম্প্রতি অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিটি এমন তথ্য জানায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিশ পাঠায়। জবাবে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে জানায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ১২ টাকা ৬০ পয়সা, যা গত ২৩ সেপ্টেম্বর লেনদেন হয় ১৬ টাকা ৭০ পয়সায়। এ হিসাবে ৫ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪ টাকা ১০ পয়সা। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই।

এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার দর শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ বা ১০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ১৬ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনব্যাপী ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৫৩৭ শেয়ার ১ হাজার ৭৭১ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর ১৬ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১৭ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হলেও গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বনিম্ন ৭ টাকা ৬০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৯ টাকা ৭০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানি ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ঋণমান অবস্থান (ক্রেডিট রেটিং) নির্ণয় করেছে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল)। তথ্যমতে, কোম্পানিটি দীর্ঘমেয়াদে রেটিং পেয়েছে ‘এ’। আর স্বল্পমেয়াদে পেয়েছে ‘এসটি-৩’। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের আলোকে এ রেটিং সম্পন্ন হয়েছে।

কোম্পানিটি ২০০৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ২৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৪০ কোটি ৩২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কোম্পানির রিজার্ভে রয়েছে ৩৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৪ কোটি ৩ লাখ ২৬ হাজার ৬৭০ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৩২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে বাকি ৪৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন, ২০২৪) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৬ পয়সা (লোকসান), আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪০ পয়সা (লোকসান)। অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে ২৬ পয়সা। অন্যদিকে প্রথম দুই প্রান্তিকে বা প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন, ২০২৪) ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৩৮ পয়সা (লোকসান), আগের বছরের একই সময় ছিল ২ পয়সা। অর্থাৎ প্রথম দুই প্রান্তিকের হিসেবে শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ২ টাকা ৪০ পয়সা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৪ পয়সা। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরে ছিল ১২ টাকা ৪২ পয়সা। এছাড়া প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১৫ পয়সা, অথচ আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ২৬ পয়সা (ঘাটতি)।

২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৬৪ পয়সা (লোকসান) এবং ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪২ পয়সা। আর আলোচিত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ হয়েছে ৩৮ পয়সা (ঘাটতি)। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩০ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখে এনএভি দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৫৬ পয়সা। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি এনওসিএফপিএস হয়েছে ১৬ টাকা ৯২ পয়সা (ঘাটতি)। এর আগে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।