নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বস্ত্র খাতের কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের। সম্প্রতি অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিটি এমন তথ্য জানায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিশ পাঠায়। জবাবে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে জানায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ধারাবাহিক শেয়ারদর বাড়ছে। ২৮ ফেব্র–য়ারি কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১৫৩ টাকা ৮০ পয়সা, যা গত ৭ মার্চ লেনদেন হয় ১৭২ টাকা ২০ পয়সায়। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই।
এদিকে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ বা ১ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ১৭৩ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩টি শেয়ার মোট ৯৩০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৭১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৭৪ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়। আর গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১৭৭ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
এদিকে সম্প্রতি চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২২) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প–ঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইল লিমিটেড। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ২১ পয়সা লোকসান গুনেছে। ডিএসইতে প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা গেছে, চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২১ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময় ছিল ৯ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি আয় ৩০ পয়সা কমেছে। অন্যদিকে প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২২) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ পয়সা (লোকসান), আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১২ পয়সা। অর্থাৎ প্রথমার্ধের হিসাবে শেয়ারপ্রতি আয় ১৭ পয়সা কমেছে। এছাড়া ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৪৭ পয়সা, যা ২০২২ সালের ৩০ জুনে ছিল ৯ টাকা ৫২ পয়সা। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৫৩ পয়সা (ঘাটতি), আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৫ পয়সা।
কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ জুন, ২০২২ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগকারীদের জন্য তিন শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯১ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২২ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৫২ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৬৬ পয়সা (ঘাটতি), আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ৭০ পয়সা।
এর আগে ৩০ জুন ২০২০ ও ২০১৯ সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৩ পয়সা লোকসান এবং ৩০ জুন ২০২০ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৪৫ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ২ টাকা ৩০ পয়সা। আর ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৮৮ পয়সা লোকসান, এনএভি হয়েছে ৯ টাকা ৩৮ পয়সা আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ হয়েছে আট টাকা সাত পয়সা।
কোম্পানিটি ১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ২২ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোট দুই কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৪৯টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে ২৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের, প্রাতিষ্ঠানিক ১৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৫৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।