কারসাজিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে আস্থা ফিরত

আইপিও’র মাধ্যমে আসা অনেক কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে  নেতিবাচক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এটা দেখার মূল দায়িত্ব ডিএসই ও বিএসইসির। নিয়ন্ত্রক সংস্থা দুটি কতটুকু দায়িত্ব পালন করেছে এখানে প্রশ্ন থেকে যায়। যারা বাজারে বিভিন্ন ধরনের কারসাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হতো, তাহলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পেতেন এবং আরও বাজারমুখী হতেন। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।  

মোশতাক আহমেদ সাদেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিডি নিউজ ২৪ ডটকমের প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদেক আবদুর রহিম হারমাছি, পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি ও সিইও মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

আবদুর রহিম হারমাছি বলেন, আসলে এখন পুঁজিবাজার ও ব্যাংক খাত এ দুটি বিষয় নিয়ে ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক বছর ধরে পুঁজিবাজার ও ব্যাংক খাতে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী বাজার উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও বাজার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে না। অন্যদিকে ব্যাংকের অবস্থাও খারাপ হচ্ছে। তাই সময় এসেছে বিষয়টি গভীরভাবে অনুধাবন করার। 

মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, পুঁজিবাজার খারাপ বা পতন হচ্ছে এটার জন্য অনেক বিষয় দায়ী। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এর দায় এড়াতে পারেন না। আবার দেখা গেছে আইপিওর মাধ্যমে আসা অনেক কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের নেতিবাচক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটা দেখার মূল দায়িত্ব হচ্ছে ডিএসই ও বিএসইসির। নিয়ন্ত্রক সংস্থা দুটি কতটুকু দায়িত্ব পালন করেছেনÑএখানে প্রশ্ন থেকে যায়। যারা বাজারে বিভিন্ন ধরনের কারসাজির সঙ্গে জড়িত, তাদের যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হতো, তাহলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পেতেন এবং আরও বাজারমুখী হতেন। 

ড. মিজানুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার ধারাবাহিক পতন অব্যাহত রয়েছে। ২০১০ সালে বাজার পতনের পর মাঝে মধ্যে বাজারে একটু গতি দেখা গেলেও সে গতি টেকসই হয়নি। বাজারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আসলে প্রণোদনা দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী ভালো বাজার তৈরি করা যাবে না। এটি সাময়িক সময়ের জন্য। বাজারে প্রাণ সঞ্চার করতে এটি কার্যকরি ভূমিকা রাখবে না। বিনিয়োগকারীদের বাজারমুখী করতে হবে। তারল্যের কোনো সমস্যা নেই। সব ধরনের বিনিয়োগকারীর কাছে পর্র্যাপ্ত অর্থ আছে। কিন্তু তারা বিনিয়োগে কোনো ভরসা বা নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। তারা দেখছেন বাজারে বিনিয়োগ করে কোনো লাভ নেই। এখানে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে এবং আস্থা একেবারে তলানিতে গেছে। তাই তাদের বাজারমুখী করতে হবে। বাজারমুখী করতে হলে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষাসহ আরও কিছু বিষয় সংস্কার করতে হবে। এটার মূল দায়িত্ব  নিয়ন্ত্রক সংস্থার। কিন্তু গত ১০ বছরে তাদের যে দায়িত্ব ছিল, সেটা পরিপালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে তারা আইপিওর নামে ১০০টি কোম্পানি বাজারে অনুমোদন দিয়েছে। এখন ওইসব কোম্পানির বেশিরভাগের শেয়ারদর ফেসভ্যালুর নিচে রয়েছে। এখানে সাধারণ বিনিয়োগকারী আসেন মূলত ঝুঁকি কমাতে। এখানে ঝুঁকি কম থাকে। তারা মনে করেন প্রাইমারি মার্কেটে নির্দিষ্ট একটি লাভ পাওয়া যায়।  আর সেকেন্ডারি মার্কেটে ঝুঁকির পরিমাণ বেশি থাকে। কিন্তু সেই প্রাইমারি মার্কেটও ধ্বংস করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মানি মার্কেটে আমানত ও সুদে নয়-ছয় করা হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০