কারসাজিকারীদের শাস্তি দিলে আর আস্থা নষ্ট হবে না

বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও অনেক সময় বাজারের বড় পতন হয়ে থাকে। কিন্তু তারা বাজারে প্যানিক সৃষ্টি করে না। বরং নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিছু কারসাজিকারীকে ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করে থাকে। বছরে যদি উদাহরণ হিসেবে দু’একজনকে শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়, তবে অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে। মানুষের আস্থা নষ্ট হবে না। আর আইপিও নিয়ে আসার সময় অবশ্যই সচেতন হতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় যদি যথাযথ পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বাজারের জন্য ভালো হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সাংবাদিক মনোয়ার হোসেন, কন্সটেলেশন অ্যাসেট ম্যনেজমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ বিপ্লব।

মনোয়ার হোসেন বলেন, টানা কদিন পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন পতনের পর গত সপ্তাহের শেষ দিনে বাজারের কিছুটা উত্থান হয়। এখন পর্যন্ত সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী। দীর্ঘদিন পর বাজারের এমন গতি ইতিবাচক। বাজার গতিবিধি অস্থিতিশীল হওয়ার অন্যতম কারণ পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষের আস্থা ভঙ্গুর। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যত দিন দৃঢ়তা না আসবে, ততদিন বাজার অবস্থার পরিবর্তন হবে না। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কিছু নির্দেশনা এসেছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে আস্থা বাড়ানোর জন্য পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং ও নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউটের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো সরকার ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের মাধ্যমে গঠিত, যেগুলো বেশ ভালো করছেÑওইসব কোম্পানি বাজারে আনার ব্যবস্থা করলে অবস্থা আরও ভালো হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে রাখা হয়েছে বাজারের দেখভাল করার জন্য; কিন্তু তারা তেমন ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাই এখানে পরিবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করা যাচ্ছে।

হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, অনাস্থা বাড়ার অন্যতম কারণ পুঁজিবাজারে ভালো কোনো কোম্পানির শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে আসেনি। যে কোনো দেশে পুঁজিবাজার ভালো হতে গেলে এমন আইপিও আনতে হবে, যেখান থেকে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারেন। সম্প্রতি একটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার পাঁচ দিনের মধ্যে শেয়ারের দাম ফেসভ্যালুর নিচে নেমে গেছে। তাই বহুজাতিক কিংবা ভালো কোম্পানি আনতে হবে। ব্যাংক খাতের অস্থিতিশীলতার পাশাপাশি সম্প্রতি গুজব ছড়িয়েছিল বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চলে যাচ্ছে। যে কারণে বাজারের এমন অবস্থা। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও অনেক সময় বাজারের বড় পতন হয়। কিন্তু তারা বাজারে প্যানিক সৃষ্টি করে না। বরং নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিছু কারসাজিকারীকে ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করে। তবে সবাইকে শাস্তির আওতায় আনে না। যাতে এমন আর না হয়, সেজন্য কয়েকজনকে শাস্তির আওতায় আনে। বছরে যদি উদাহরণ হিসেবে দু’একজনকে শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়, তবে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে। মানুষের আস্থা নষ্ট হবে না। আর আইপিও নিয়ে আসার সময় অবশ্যই সচেতন হতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় যদি যথাযথ পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তা বাজারের জন্য ভালো হবে। প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ভালো কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নয়, বরং দায়িত্ব ডিএসইর। তাই ভালো কোম্পানি আনার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের অনর্থক হয়রানি না করাই ডিএসইর অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত।

শ্রুতিলিখন: পিয়াস

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০