Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 4:28 am

কারা কর্মকর্তা বজলুর রশীদের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় কারা অধিদপ্তরের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) বজলুর রশীদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ মো. ইকবাল হোসেন গতকাল দুদকের এই মামলায় বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ২২ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ঠিক করেছেন বলে দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন।

অভিযোগ গঠনের আগে বজলুর রশীদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন তিনি। মামলায় বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ২৬ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী রোডে রূপায়ণ হাউজিংয়ের স্বপ্ন নিলয় প্রকল্পের দুই হাজার ৯৮১ বর্গফুট আয়তনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন বজলুর রশীদ। এর দাম হিসেবে পরিশোধ করা তিন কোটি ৮ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি প্রদর্শন করতে পারেননি।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য রূপায়ণ হাউজিং এস্টেটের সঙ্গে বজলুর চুক্তি করেন। এরপর ২০১৮ সালের ৭ জুন পর্যন্ত ৫৪ হাজার টাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে চেকে পরিশোধ করেন। আর বাকি তিন কোটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নগদে পরিশোধ করেন।

বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে অভিযোগপত্রে।

১৯৯৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বজলুর রশীদ ঢাকায় কারা সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ডিআইজি হিসেবে এর আগে সর্বশেষ ছিলেন রাজশাহীতে। গত বছরের ৬ অক্টোবর দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা স্থানান্তর করতে ডিআইজি প্রিজনস (হেডকোয়ার্টার্স) বজলুর রশীদ অভিনব এক পন্থা বেছে নিয়েছেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শতাধিক ধাপে তিনি পাঠিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। টাকা তুলেছেন তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহার।

এজন্য প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে সিম তোলা হয়েছে এবং সরাসরি নিজে টাকা না পাঠিয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। এরপর এই কারা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুদকের তলবে হাজির হলে ২০ আগস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওইদিনই দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে। পরে তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।