Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 3:33 am

কারা হেফাজতে মৃত্যু: জেল সুপার ও ওসিসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম কারাগারে রুবেল দে (৩৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি প্রাথমিকভাবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।

গতকাল রোববার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালত এ আদেশ দেন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি একই আদালতে মামলাটির আবেদন করেছিলেন কারাগারে মারা যাওয়া রুবেলের স্ত্রী পূরবী পালিত। ওইদিন আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করেন। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এরপর গতকাল মামলাটির বিষয়ে আদেশ প্রদান করেন আদালত।

মামলাটিতে আসামি করা হয়েছে, বোয়াখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আছহাব উদ্দিন, একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম আবু মুসা, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাঈন উদ্দিন, এএসআই মো. সাইফুল ইসলাম, কনস্টেবল কামাল ও আসাদুল্লাহ, এসআই রিজাউল জব্বার, ঘটনার দিনের থানার ডিউটি অফিসার, চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন, জেলার এমরান হোসেন মিয়া, ডেপুটি জেলার নওশাদ মিয়া, আখেরুল ইসলাম, সুমাইয়া খাতুন ও ইব্রাহিম এবং কারাগারের পদ্মা ১৫ নম্বর ওয়ার্ড মাস্টার।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২৭ জানুয়ারি বিকেলে বোয়ালখালী থানা পুলিশের একটি টিম রুবেল দেকে গ্রেপ্তার করে। ওইদিন রাতে বোয়ালখালী থানা থেকে রুবেলের পরিবারে ফোন দিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয় এবং টাকা না দিলে রুবেলকে ৫০০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধারের মামলা সাজিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। কথামতো টাকা দিয়ে অস্বীকৃতি জানানোয় ২৭ জানুয়ারি রুবেলকে ২০০ লিটার মদ উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালত রুবেলকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।

পরে ২ ফেব্রুয়ারি রুবেলকে তার স্বজনরা কারাগারে দেখতে যান। সেদিন তাকে হুইলচেয়ারে করে স্বজনদের সামনে আনা হয় এবং ওইদিন স্বজনরা রুবেলের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। এর কারণ জানতে স্বজনদের তাড়িয়ে দিয়ে কারারক্ষীরা রুবেলকে নিয়ে যান। পরে ৪ ফেব্রুয়ারি আইনজীবীরা রুবেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করেন। এরই মধ্যে ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে কারাগার থেকে খবর আসে রুবেল মারা গেছেন এবং তার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অজয় ধর বলেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে দায়ের করা মামলাটির আবেদন প্রথমে আদালত গ্রহণ করেন। এটি যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীর বাদীর বক্তব্য শুনেন। সবশেষ আজ (রোববার) মামলাটি পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।