কালবৈশাখীর তাণ্ডবে আমের ব্যাপক ক্ষতি

প্রতিনিধি, বেনাপোল (যশোর) : দশ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে যশোরের শার্শা উপজেলায় আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমচাষিরা বলছেন, ঝড়ে আমবাগানের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আম ঝরে পড়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার সময় কালবৈশাখী ঝড়ে এ এলাকা একেবারে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, তারা এখনও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে পারেনি।

জানা যায়, শার্শা উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এখানে তিন হাজার ১৪০টির মতো ছোট-বড় আমবাগান রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলাব্যাপী প্রায় সব বাগানে কালবৈশাখী ঝড় হানা দিয়েছে। ঝড়ে বাগানে বাগানে মাটিতে পড়ে আছে আম। ফেটে নষ্ট হয়েছে অনেক। কোনো কোনো বাগানে আমগাছের ডাল ভেঙে পড়েছে।

আমবাগান চাষি নুর আলী সরদার জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে ঝড়ে তার বাগানের বিভিন্ন জাতের প্রায় সব আম পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

একই কথা জানান উপজেলার বাগুড়ী গ্রামের আমচাষি সহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, দুই বছর আগে আম্ফান ঝড়ে আমার অনেক লোকসান হয়েছিল। এবছর স্বপ্ন ছিল আমের ভালো দাম পাব, কিন্তু কালবৈশাখী ঝড়ে আমার স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে গেল।

উপজেলার বাগআঁচড়ার পার্শ্ববর্তী কুলবাড়ীয়া গ্রামের আমচাষি রাজু বলেন, ৩০ বিঘা জমির ওপর তার আমবাগান রয়েছে। ঝড়ে বাগানের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ আম পড়ে গেছে। বেশ কিছু গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে। আম এখনও পরিপক্ব না হওয়ায় ঝরে পড়া আম চার থেকে পাঁচ টাকা কেজির বেশি বিক্রি হবে না। আর যেসব আম ফেটে গেছে, সেসব কেউ কিনবে না।

বাগআঁচড়া, কায়বা ও গোগা এলাকার কয়েকজন আমচাষি জানান, আম্ফান ঝড়সহ গত কয়েক বছরে লোকসানের পরও এবার আমের ফলন ব্যাপক হয়েছিল। এতে করে তারা স্বপ্ন দেখছিল লাভের। কিন্তু ১০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে সে স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ মণ্ডল বলেন, শার্শায় এবার ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এবার বাগানে আম ভালো ধরেছিল। তবে কালবৈশাখী ঝড়ে এ উপজেলায় আমচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাগানের অনেক আম ঝরে পড়ায় আমচাষিদের লোকসান হবে বলে মনে হচ্ছে। কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে আমচাষিরা আর না পড়লে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। তবে ঝড়ে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে ঝড়ে আম ছাড়াও বোরো ধানের ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ধানগাছ হেলে পড়া এবং জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ধান চিটা হয়ে যাওয়াসহ পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। এতে ধানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০