Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:15 pm

কালাইয়ে আলুর পরিবর্তে সরষে চাষ

প্রতিনিধি, জয়পুরহাট: বাংলাদেশের আলু উৎপাদনের জন্য দ্বিতীয় জন্মস্থান হলো জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা। এ উপজেলা প্রচলিত ‘কালাইয়ের প্রাণ আলু আর ধান’। একথা মানুষ ভুলে যাচ্ছে। এখন আলুর পরিবর্তে লাভের ফসল সরিষা। বাম্পার ফলন, পরিশ্রম আর কম খরচ কারণে দিন দিন সম্ভাবনাময় ফসলে পরিণত হয়েছে সরিষা। অন্যদিকে আলু উৎপাদনে অধিক খরচ এবং আলুর দাম কম হওয়ায় এমনটি দাবি করেছে এ এলাকার কৃষকরা।

উপজেলার অনেক মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত জোড়া সবুজ মাঠ এখন হলুদের দখলে। বিস্তীর্ণ মাঠে এখন সরিষার হলুদ ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য অগ্রহায়ণের হিম-শীতল বাতাসে দোল খাচ্ছে। শীতের সকালে সরিষার হলুদ ফুলের ম-ম গন্ধে ভিন্নরকম অনুভূতি তৈরি করছে। গুণগুণ শব্দে ফসলের ক্ষেতে ক্ষেতে এক ফুল থেকে আরেক ফুলে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। এ যেন কোনো এক হলুদ রাজ্য। মৌমাছির গুঞ্জনে এ রাজ্যে মন হয়ে ওঠে চলেছে চনমনে। সরিষায় কম খরচ, কম সময়, কম ঝামেলায় ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকেরা ঝুঁকে পড়ছে। প্রতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা চাষ বেড়েছে।

উপজেলার আহমাবাদের খোশালপুর নওপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ, জিন্দারপুর ইউনিয়নের বেগুনগ্রাম গ্রামের কৃষক সাজ্জাদুর রহমান, পৌরসভার থুপসারা মহল্লার আমিরুল ইসলামসহ অনেকে জানান, সরিষা চাষে শ্রম কম, অন্যান্য ফসলের তুলনায় রোগ-বালাইও নেই। শুধু জমি প্রস্তুত সময় একবার সার প্রয়োগ করে সরিষা রোপণ করা হয়। ফসল ঘরে তোলা সময় পর্যন্ত ১ থেকে ২ বার সেচ দিতে হয় সরিষার ক্ষেতে। এছাড়া সরিষার জমিতে পরে কোন ফসল ফলাতে অতিরিক্ত সার ব্যবহার করতে হয় না।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, গত বছর ৪৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করার পরে এবার চাষ করা হয়েছে ৬০০ হেক্টর জমিতে। এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে কৃষকের খরচ হবে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। উৎপাদন হবে প্রতি বিঘায় ৭ থেকে ৮ মণ। বর্তমানে মান ভেদে প্রতি মণ সরিষা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায়।