প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার থেকে চৌগাছা যাওয়ার প্রধান সড়ক চলাচলে মারাত্মকভাবে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বর্ষা বা শুকনোর সময় কোনো যানবাহন চলচল করতে পারছে না। যাও চলাচল করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে। এ সড়কটি বারোবাজার হয়ে হাকিমপুর, যশোর, চৌগাছা ও কোটচাঁদপুর যাওয়ার একমাত্র সড়ক। সড়কে ছোট-বড় গর্তে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে এবং রাস্তায় সাধারণ মানুষের জনদুর্ভোগের শেষ নেই।
জানা যায়, বেলাট, সাদিকপুর, সাতগাছিয়া বারেক মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে পাঁচ থেকে ছয়শ’ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ মালবাহী ট্রাক, ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যে কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে বিভিন্ন দুর্ঘটনা, ফলে জনসাধারণের ও যানবাহনের ক্ষতি হচ্ছে। এ বেহাল দশা থেকে কবে রক্ষা পাবে তা কেউ বলতে পারে না।
এ তিন কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে যার কারণে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্বিষহ দুর্ভোগ। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় কৃষকদের মাঠের ফসল তোলা থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজেই পড়তে হচ্ছে সীমাহীন ভোগান্তিতে। স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কেউই এগিয়ে আসছে না জনসাধারণ ও যাচবাহন চলাচলের উপকারে। পথচারী, স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা ও মাঠের ফসল বাড়িতে আনতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত হাজার মানুষ ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে। বিশেষ করে চলতি বর্ষায় রাস্তায় হাঁটুপানি বেঁধে রয়েছে, রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাওয়ার কারণে চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা দিয়ে গরুর গাড়ি ও ট্রাক্টরের অতিরিক্ত চলাচলের কারণে রাস্তা ভেঙে ও রাস্তার পিচ পাথর উঠে হাওয়ায় পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। স্কুল, কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রীদের যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষার পানি রাস্তায় জমে থাকায় রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা শিশুদের জন্য চরম কষ্টদায়ক।
প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ-খোয়া উঠে গেছে অনেক আগেই। এখন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের। ফলে সড়কে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। বৃষ্টি হলে পানি জমে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। এ সড়কে সাধারণ মানুষের ও যানবাহনের বেহাল দশা প্রায় পাঁচ বছর ধরে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা এ সড়কটি মেরামত না করে নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। সংস্কারের অভাবে সড়কের পুরোটাই খানাখন্দে ভরে গেছে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। গর্তের অনেক জায়গায় পানি জমে থাকে। আবার অনেক জায়গায় গাড়ি চলার সময় আশপাশ ধুলাময় কোথাও কাদাময় হয়ে যাচ্ছে।
বারাবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক রফিকুল ইসলাম বলেন, বারবাজারের পর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত রাস্তা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা দিয়েই কাদা পানি জামা কাপড়ে লাগিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করছে। প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। বেহাল দশা সড়কের কারণে স্কুল কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত তাদের প্রতিষ্ঠানে আসতে পারে না।
ইজিবাইক চালক ফারুক হোসেন বলেন, গাড়িতে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময়, যাত্রীদের গালমন্দ আর গাড়ির ক্ষতি মেনে ওই পথ দিয়েই গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। তবে মাস দুই ধরে রাস্তাটি এতই খারাপ হয়েছে ইজিবাইক, ভ্যান, আলমসাধু, পিকআপ, ট্রাক চলাচল করতে পারছে না। বর্তমানে রাস্তা খারাপের কারণে যানবাহন চলাচল কম হয়ে গেছে আবার যাত্রীদের কাছে থেকে ভাড়াও বেশি নেয়া হচ্ছে। অনেকে আছে এ রাস্তায়, তারা গাড়ি চালাতে চাচ্ছে না, গাড়ি চলাচলে অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
রাস্তার এ বেহাল দশার ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, সড়কটি আরসিআইপি প্রকল্পে দেয়া হয়েছে। সংস্কারের জন্য অনুমোদন হলে সড়কটির কাজ শুরু হবে।