সংসদীয় কমিটির সুপারিশ

কাস্টমসের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেতে আরেক ধাপ অগ্রগতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদানের ক্ষেত্রে আরও একটি বাধা কাটল। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদানের বিধানের সুপারিশ করে কাস্টমস বিল, ২০১৯-এর রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে গতকাল এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সদস্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কাজী নাবিল আহমেদ, আহমেদ ফিরোজ কবির ও রুমানা আলী সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় কার্যপ্রণালি বিধির ২৪৬ ধারা অনুযায়ী স্থায়ী কমিটিতে প্রেরিত ‘কাস্টমস বিল, ২০১৯’ এবং ডাকঘর সঞ্চয় স্কিম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় ‘কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯’-এ কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রদান-সংক্রান্ত ১৫৮ক ধারাটি ছিল না। রাজস্ব আদায়ে নির্বিঘেœ আইনটি যেন প্রয়োগ করা যায়, সে লক্ষ্যে ২০০০ সালে শুধু রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করা হয়।

কার্যপ্রণালি বিধির ২৪৬ ধারা অনুযায়ী স্থায়ী কমিটিতে প্রেরিত ‘কাস্টমস বিল, ২০১৯’ পর্যালোচনা শেষে কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদানসহ বিলটি হুবহু সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত বৈঠকে গৃহীত হয়। নিয়ম অনুযায়ী সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চূড়ান্ত রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপন করা হবে। সংসদ থেকে পাস হওয়ার পর ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

অপরদিকে, কাস্টমস আইনে কর্মকর্তাদের প্রথম শ্রেণির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়ার ১৮৯ ধারা যুক্ত করায় প্রথম থেকে নাখোশ প্রশাসন সার্ভিস। ধারাটি বাতিল করতে ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিএএসএ)।

চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকেও দেওয়া হয়।

এনবিআর সূত্র জানায়, কাস্টমস আইন, ১৯৬৯-এ কাস্টমস আইনে কর্মকর্তাদের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। পরে এ আইন সংশোধন করে নতুন ধারা (১৫৮এ) যুক্তের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়। এ ধারায় বলা আছে, কাস্টমস আইনের অধীনে সহকারী কাস্টমস কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তারা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের মতো ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী যে কোনো স্থানে প্রবেশ, তল্লাশি, আটক ও গ্রেফতার করতে পারবেন। প্রস্তাবিত নতুন কাস্টমস আইনের এ ক্ষমতা বহাল রাখা হয়েছে (১৮৯ ধারা)। ১১ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘কাস্টমস বিল-২০১৯’ সংসদে উত্থাপন করেন। পরে তা ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিএএসএ সভাপতি হেলালুদ্দীন আহমেদের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ১৯৬৯ সালের কাস্টমস আইনে কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া সংক্রান্ত ১৫৮এ ধারাটি ছিল না। ২০০০ সালে একটি সংশোধনীর মাধ্যমে এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রস্তাবিত নতুন আইনেও ১৮৯ ধারায় প্রবেশ, তল্লাশি, আটক ও গ্রেফতারের উদ্দেশ্য পূরণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর অর্পণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

২০০৭ সালে বিচার বিভাগ পৃথককরণ ও ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের পর বর্তমানে ১০(৭) ধারা অনুযায়ী মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ কমিশনারকে এবং ১২(১) ধারা অনুযায়ী বিশেষ প্রয়োজনের নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সহকারী পুলিশ সুপারের নিচে ননÑএমন পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণের কোনো সুযোগ নেই। ফলে ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত ম্যাজিস্ট্রেসির বর্তমান রূপরেখার সঙ্গে প্রস্তাবিত কাস্টমস আইনের ১৮৯ ধারার বিধান সাংঘর্ষিক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০