কিছু কিছু মহল চক্রান্ত করে মূল্যস্ফীতি বাড়ায়: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক : দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন মানুষের সবচেয়ে কষ্ট হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, সেটা অনেকটা কমিয়ে এনেছি। তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু মহল চক্রান্ত করে মূল্যস্ফীতি বাড়ায়। তবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, এটাও সত্য। আগে এত ক্রয়ক্ষমতা ছিল না।’ খবর: বাসস।

গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে এ যৌথসভা হয়।

নির্বাচন শেষে নিজেদের মধ্যে দোষারোপ ও অপরাধ খোঁজা বন্ধ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার পাশাপাশি নেতাদের জন্য প্রার্থিতা উš§ুক্ত রাখার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বেশি দোষারোপ করি এবং অপরের দোষ ধরতে ব্যস্ত থাকি, এতে আমাদের বিরোধী দলকে উৎফুল্ল করবে এবং তাদের সুযোগ দেয়া হবে।’

নির্বাচন যাতে না হয়, সে জন্য অনেক চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র ছিল বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা নির্বাচন করেছি।’

দলীয় প্রার্থিতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বড় দল, অনেকেই নির্বাচন করতে চায়, সেই জন্য নির্বাচনটা উম্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। যারা করতে চাই করুক।’

নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা নির্বাচন করেছে, কেউ জয়ী হয়েছে, কেউ পারে নাই। সে ক্ষেত্রে আমি সকলকে অনুরোধ করব, একজন আরেকজনকে দোষারোপ করা বা কার কী অপরাধ, সেগুলো খুঁজে বেড়ানো বন্ধ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কারও কারও কষ্ট আছে, কারও কারও আনন্দ আছে। কিন্তু ওই আনন্দ, দুঃখ, কষ্ট, হাসি, কান্না সবকিছু মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। সবাইকে আবার এক হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের যে আস্থা-বিশ্বাস আমরা অর্জন করেছি, সেটা যেন কোনোমতে হারিয়ে না যায়।’

সংগঠন যদি পাশে না থাকে, তাহলে কোনো অর্জন করা সম্ভব হয় না বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রতিটি সাফল্যের পেছনে একটা শক্তি দরকার। তার শক্তি বাংলাদেশের জনগণ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া আরও কয়েকটি দল অংশগ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের যে সমর্থন পেয়েছে, সেটা কাজের স্বীকৃতি হিসেবে। দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছে সরকার। এ জন্য ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন। কেউ জিততে পেরেছেন বা পারেননি। তাই সবাইকে মেনে নিয়ে দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দল নির্বাচন করেনি, তারা তো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে অভ্যস্ত নয়। জাতীয়-আন্তর্জাতিক সব জরিপে স্পষ্ট ছিল, বিএনপি তাদের জোট নিয়ে

নির্বাচন করলে সরকার গঠন করার সাফল্য অর্জন করবে না। সেই পরিমাণ আসনও তারা পাবে না। একমাত্র আওয়ামী লীগের বেলায় বলা ছিল, এককভাবে সরকার গঠন করার মতো পর্যাপ্ত আসন পাবে। এ কথা শোনার পর তারা নির্বাচনে আসবে না, তা তো স্বাভাবিক।

বিএনপি ক্ষমতা দখলকারীদের পকেট থেকে সৃষ্টি হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের ভোট চুরি করা, কারচুপি করাÑএসব সংস্কৃতি তো বিএনপির আমলেই সৃষ্টি। তারা ওইটাই ভালো বুঝত।

দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সজাগ থাকতে হবে অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসÑযারা রেলগাড়িতে মা-সন্তান-শিশুকে পুড়িয়ে মারে, যারা বাসে আগুনে মানুষ মারে ওই অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাদের মিথ্যাচার এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। জনগণ এবার তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।

যৌথসভার শুরুতে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভা শেষে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের পক্ষ থেকে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০