ক্রীড়া ডেস্ক: বাংলাদেশ দলের এখনও তিনি এক নম্বর উইকেটকিপার। হয়তো উইকেটের পেছনের সময়টা এখন ভালো যাচ্ছে না তার। যে কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে এ দায়িত্বটা নিয়ে মুশফিকুর রহিমের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে বহুবার। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সব সময় তার প্রতি আস্থা রেখেছে। এবারও তার ওপরই সিদ্ধান্তের ভার ছেড়ে দেয় বোর্ড। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট সিরিজে উইকেটকিপিং থেকে সরে দাঁড়ালেন মুশি। অধিনায়কের সঙ্গে এ সিরিজে তাকে ব্যাটিংয়ে দেখা যাবে ৪ নম্বর। আর উইকেটের পেছনে দাঁড়াবেন লিটন কুমার দাস। গতকাল ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন।
এর আগে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে নিজের উইকেটকিপিং নিয়ে মুশফিক বলেছিলেন, তিনি ব্যাটিং ও অধিনায়কত্বের সঙ্গে উইকেটরক্ষকের কাজটাও উপভোগ করেন। বোর্ড যদি না চায়, তবে এ দায়িত্ব থেকে তিনি সরবেন না। কিন্তু হঠাৎ করেই কি নিজেই সরে গেলেন? এ নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছেন, ‘আমি ও কোচ অফিসিয়ালি মুশফিককে এটা জানিয়েছি। ও দলের সেরা ব্যাটসম্যান। মুশফিক এখন যে রকম দুর্দান্ত ফর্মে আছে, আমরা মনে করি ব্যাটিংয়ে সে আরও কিছু দিতে পারে। সেজন্য টেস্টে সে ৪ নম্বরে ব্যাটিং করবে এবং উইকেটকিপিং করবে না। সবচেয়ে ভালো যেটা, সিদ্ধান্তটা মুশফিক ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে।’
এরপর মুশফিককে কুমারা সাঙ্গাকারা ও ব্র্যান্ডন ম্যাককালামের কথা বলেছেন খালেদ মাহমুদ ও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সাঙ্গাকারা ও ম্যাককালাম দুজনই এক সময় ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কিপিং করতেন। আবার কোনো এক সময় গিয়ে তা ছেড়েও দেন। কিপিং ছাড়ার পর দুজনেরই ব্যাটিংয়ে উন্নতি হয়। সাঙ্গাকারা কিপিং ছেড়ে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে শুরু করার পর আরও বড় ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠেন। তার ব্যাটের ধার বেড়ে যায় বহুগুণে। ম্যাককালামেরও ব্যাটিংয়ে উন্নতি হয়। খালেদ মাহমুদ সুজন এ নিয়ে বলেছেন, ‘ওকে বলেছি, উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান থাকার সময় কুমার সাঙ্গাকারার রানের গড় ছিল ৩৮, কিপিং ছাড়ার পর ৬০। ম্যাককালামের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। এক সঙ্গে কিপিং, অধিনায়কত্ব ও ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা কঠিন কাজ।’
দলের ম্যানেজার ও কোচ বুঝিয়ে বলায় শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা সফরের টেস্ট সিরিজে উইকেটকিপিং থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মুশফিক। তবে রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে তাকে উইকেটের পেছনে দেখা যাবে নিয়মিত।
এর আগে উইকেটকিপার হিসেবে ২০০৭ সালে অভিষেক ঘটেছিল মুশফিকের। এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে ৫২টি টেস্ট খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। এর মধ্যে চোট-বিশ্রামের জন্য ৫টি টেস্ট ছাড়া বাকি ৪৭টি টেস্টে মূল উইকেটকিপারের দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক। এবার শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্টে শুধু একজন ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলবেন তিনি। এখন দেখার বিষয় ব্যাটিংয়ে কতটা আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারেন মুশি। এর সঙ্গে লিটন দাসেরও একটা পরীক্ষা হয়ে যাচ্ছে তাহলে।