শেয়ার বিজ ডেস্ক: কিশোরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর ১২টায় শহরের পুরান থানা ও একরামপুর মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি সারা দেশে সংঘর্ষে হেফাজতের কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এবং রোববার হেফাজতের ডাকা হরতালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে বিএনপির দুটি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার প্রতিবাদে শহরের রথখোলা ময়দানে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় দলটি। সূত্র: বিডি নিউজ।
গতকাল দুপুর ১২টায় পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়ার নেতৃত্বে শহরের শোলাকিয়া এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল রথখোলা ময়দানের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। একই সময়ে শহরতলির সতাল থেকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি ইসরাইল মিয়ার নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল রথখোলায় আসার চেষ্টা চালায়।
শহরের পুরান থানা ও একরামপুর এলাকায় মিছিল দুটিকে বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। অন্যদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে পুলিশ ও বিএনপির অন্তত ৪০ জন আহত হন। সংঘর্ষের কারণে একরামপুর, পুরান থানা, গৌরাঙ্গবাজার, রথখোলাসহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে শহরের ঈশাখা সড়ক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি রথখোলা ময়দানে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি যুগ্ম সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ বক্তব্য দেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম বলেন, রথখোলা ময়দানের কর্মসূচিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসার সময় পুরান থানা ও একরামপুর এলাকায় কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া ও নির্বিচারে কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়ে। এতে জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তারেকুজ্জামান, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এমদাদ, ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়াসহ ২০-৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক বলেন, করোনার কারণে একসঙ্গে জমায়েতে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও অনুমতি ছাড়াই বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করেন। ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও কিছু কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে রোববার হেফাজতের ডাকা হরতালের সময় কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের স্টেশন রোডে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙ্চুর, আগুন লাগানো ও পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধাদানের অভিযোগে আড়াই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন শহরের পুলিশ পরিদর্শক সোহরাব মিয়া। এ মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।