নিজস্ব প্রতিবেদক: ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশবাসীকে সব উসকানির মুখে শান্ত থেকে নিজেদের ঐক্য ও সংহতি দৃঢ়ভাবে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা শহরের নানুয়ার দিঘিরপাড়ের একটি মণ্ডপে উদ্ভূত ঘটনা কেন্দ্র করে দেশের কয়েকটি স্থানে পূজামণ্ডপ ও চাঁদপুরে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর হামলাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে মানুষের হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে দেশবাসী চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। দেশের জনগোষ্ঠীর কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবে এখন নিরাপত্তা নেই। সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতেই নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বেড়াজাল নির্মাণ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, কভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করতে না পারা, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি, অসহনীয় বেকারত্ব, সরকারি দলের লোকদের ব্যাপক চাঁদাবাজি, লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ক্ষমতাসীনদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনা, নাগরিকদের বাক-ব্যক্তিস্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে হরণ করে গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দেয়াসহ দেশের নানা সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতেই সরকার কুমিল্লায় এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। এটি সরকারের পরিকল্পিত চক্রান্ত।’
তিনি বলেন, ‘জনরোষে ভীত হয়ে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আওয়ামী সরকার এখন আরও বেশি মাত্রায় অপকর্মের আশ্রয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। তাদের কোনো গণভিত্তি নেই বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিপজ্জনক নীলনকশা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েই তারা ক্ষান্ত হচ্ছে না, বরং নতুন নতুন হিংস্র ঘটনা সৃষ্টি করে দেশবাসীর মধ্যে বিভেদ-বিভাজনের ভয়াবহ খেলায় মেতে উঠেছে। তারা মানুষের জীবন কেড়ে নিতেও দ্বিধা করছে না। এই অবৈধ সরকার আগুন নিয়ে খেলছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবহমান বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সমন্বিত বৈশিষ্ট্যকে বিকৃত করে ক্ষমতাসীনরা সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে ফায়দা লুটতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশের মানুষ ষড়যন্ত্রের স্বরূপ বোঝে। তাই সচেতন দেশবাসী সরকারের অশুভ পরিকল্পনা সহজেই টের পায়। কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটল এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘এ সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক উসকানি, উত্তেজনা, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ, প্রতিমা ভাঙচুর ও লুটপাট ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। এসব অপকর্মের সঙ্গে সরকারি দলের লোক জড়িত থাকার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে কুমিল্লার ঘটনায় জনজীবনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশবাসীকে সব উসকানির মুখে শান্ত থেকে নিজেদের ঐক্য ও সংহতি দৃঢ়ভাবে রক্ষার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’