প্রতিনিধি, কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেলকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বত্তরা। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে কাউন্সিলরের সহযোগী হরিপদও নিহত হন।
সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় এই নগরের পাথরিয়াপাড়ার এ হত্যাকান্ড ঘটে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কাউন্সিলর মো. সোহেল (৫২) কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়রও ছিলেন। তাঁর বাড়ি নগরের সুজানগর এলাকায়। ২০১২ ও ২০১৭ সালে তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্যানেল মেয়র ছিলেন।
মো. সোহেল সুজানগর এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে আছে।
জানা যায়, বিকেল সাড়ে চারটায় কুমিল্লা নগরের পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে বসা ছিলেন কাউন্সিলর মো. সোহেল। এ সময় কালো মুখোশধারী একদল দুর্বৃত্ত কার্যালয়ে ঢুকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পিস্তলের দুটি গুলি তাঁর মাথায়, দুটি বুকে, অন্য চারটি গুলি পেট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে। এ সময় আরও অন্তত পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ (৩৫) মারা যান। গুলিবিদ্ধ অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত অন্যান্যরা হলেন—জুয়েল (৪০), আউয়াল হোসেন রিজু (২৩), রাসেল (২৮), মাজেদুল হক বাদল (২৫) ও সোহেল চৌধুরী।
এদিকে ঘটনার পর কাউন্সিলর কার্যালয়ে সামনে শত শত মানুষ পাথরিয়াপাড়া সড়কে বিক্ষোভ করছেন। র্যাব ও পুলিশ ক্ষুব্ধ জনতাকে সরানোর চেষ্টা করছে। কাউন্সিলর কার্যালয়ের গিয়ে দেখা যায়, সোহেলের বসার স্থানে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। কার্যালয়ের চেয়ার ভাঙা।
১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া জানান, বিকালে নেতাকর্মীদের নিয়ে নিজ কার্যালয়ে বসে ছিলেন সোহেল। এ সময় মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন সন্ত্রাসী অফিসে ঢুকে অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে কাউন্সিলরসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এসময় সোহেল নিজের চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গুলির আওয়াজে আশপাশের মানুষ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা সীমান্তবর্তী বউ বাজার এলাকার দিকে পালিয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীরা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত বলেন,‘সোহেলের শরীরে অন্তত ১০টি গুলি করা হয়েছে। শনিবার তাঁর সঙ্গে একটি সভা করে এসেছি। সোহেল তাঁর এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।;
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, `পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছেন পুলিশের অতিরিক্ত সদস্যরা। পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।‘