প্রতিনিধি, কুমিল্লা: কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে চট্টগ্রামের রেলওয়ে কর্মচারী শফিউদ্দিন হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির রায় কার্যকর হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টায় ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করেন জল্লাদ সিরাজ উদ্দীন নাসির ও কারাকতৃপক্ষ ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শিউলি রহমান তিন্নি সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, ‘তারা সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে কারাবিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হয়। বিধি অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের আগে উভয়ের পরিবারের লোকজন তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। মঙ্গলবার সকালে দুই জনের সঙ্গে সন্তান ও স্বজনদের শেষ দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু তারা আসেননি। রাতে উভয়ের ফাঁসি কার্যকরে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর উত্তর আমবাগান রেলওয়ে কোয়ার্টারের ৩৬/এ বাসায় ঢুকে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী শফিউদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
শফিউদ্দিন স্থানীয় রেলওয়ের আমবাগান এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিভিন্ন কারণে রেলওয়ের জায়গা থেকে চার দফায় অবৈধ বস্তি ও কলোনি উচ্ছেদ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এসব ঘটনার জের ধরে সরকারি বাসায় ঢুকে তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে বোমা ফাটিয়ে এলাকা ত্যাগ করে খুনিরা।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর ২৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এই হত্যা মামলায় শিপন ও ইমনকে ফাঁসি, সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চার জনকে খালাস দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তা খারিজ হয়। নিয়ম অনুযায়ী ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে কারাবিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হয়।