শেয়ার বিজ ডেস্ক: পর্যটকদের পচা ও নিন্মমানের খাবার দেয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করায় ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন কুয়াকাটার রেস্তোরাঁ মালিকরা। রেস্তোরাঁগুলোয় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করায় ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তারা। সকাল থেকে রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে কর্মসূচি পালন করছেন মালিক ও কর্মচারীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পর্যটকরা। এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০টায় কুয়াকাটা খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যানারে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। খবর: বাংলা ট্রিবিউন।
রেস্তোরাঁ মালিকরা জানিয়েছেন, গত দুই বছর করোনা ও লকডাউনের কারণে হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ ছিল। এ সময় কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়েছে এবং ভাড়া পরিশোধ করতে হয়েছে। লোকসান গুনতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধারদেনা করে আবারও ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু বর্তমানে নিন্মমানের খাবার দেয়ার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে তাদের জরিমানা করছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এজন্য হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে ধর্মঘটের পালন করছেন তারা।
কুয়াকাটা খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘ধরেন সারাদিনে একজন হোটেল মালিক ১০ হাজার টাকা বিক্রি করলেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে কোনো একটি অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করলেন। এভাবে জরিমানা করায় আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে আন্দোলন করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। জরিমানা দিতে গিয়ে ধারদেনায় জর্জরিত আমরা। প্রশাসন বিষয়টি সমাধান না করলে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।’
এদিকে রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে কর্মসূচি পালন করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন পর্যটকরা। খাবারের জন্য পর্যটকদের কুয়াকাটা ছেড়ে অন্য স্থানে যেতে হচ্ছে।
মাদারীপুর থেকে আসা পর্যটক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে তিন দিনের জন্য কুয়াকাটায় এসেছি। কিন্তু রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মো. শহিদুল হক বলেন, ‘মূলত পর্যটকরা যাতে প্রতারিত না হন, সেজন্য অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ছেনমং রাখাইন বলেন, ‘কুয়াকাটায় ঘুরতে এসে কোনো পর্যটক যাতে প্রতারিত না হন, সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে। ধর্মঘট ডেকে পর্যটকদের জিম্মি করা যাবে না। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে কুয়াকাটা পৌর শহরের চৌরাস্তায় অভিযান চালিয়ে বাসি ও পচা খাবার বিক্রির দায়ে চার রেস্তোরাঁ মালিককে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ছেনমং রাখাইন এ অভিযান চালান। প্রতিবাদে রাতে ধর্মঘট ডাকেন রেস্তোরাঁ মালিকরা।