কুষ্টিয়ায় পৃথক হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের যাবজ্জীবন

প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও সদর থানায় দায়ের করা পৃথক দুটি হত্যা মামলায় এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে জরিমানা, অনাদায়ে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক তাজুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামে সংঘটিত হত্যা মামলায় এবং জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম কুমারখালী থানার একটি হত্যা মামলায় পৃথক আদালতে এ রায়  ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেনÑকুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিন বিশ্বাসের তিন ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস (৬০), বাবুল বিশ্বাস (৪৫), হাবিল বিশ্বাস (৫১), আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস ছেলে মাহামুদুল হাসান সবুজ (৩০), একই এলাকার কামরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে রাশেদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৪১), মৃত জলিল গায়েনের ছেলে মাসুদ গায়েন (৩৯), রাজবাড়ী জেলার তেঁতুলিয়া এলাকার আব্দুল আজিজ মোল্ল্যার ছেলে জিল্লুর রহমান (৩০), একই এলাকার দলিল উদ্দিনের ছেলে তারেক শেখ ওরফে মাধব (৩০), মাহাফুজুর রহমানের ছেলে জাহিদ খাঁ (৩০), সিংড়া এলাকার সাইফুর রহমানের ছেলে সৌরভ মিয়া (৩৬) (পলাতক)।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস, মাহামুদুল হাসান, বাবুল বিশ্বাসসহ ৬ জন উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার চরসাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দ চরের ঘাটে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পরদিন ১ নভেম্বর কুমারখালী থানা পুলিশের এসআই লিয়াকত আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালে ৩১ অক্টোবর ৩০২/৩৪ ধারায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্তরা রাজবাড়ী জেলার তেঁতুলিয়া এলাকার হাশেম শেখের ছেলে মিঠু শেখকে (২৪) ধরে এনে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে যায় নদীতে।

অপরদিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামে ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ইউপি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ও বিবদমান শত্রুতার জেরে দহকুলা গ্রামের সোহরাব উদ্দিন মোল্লার ছেলে মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই মাহবুবুল করিম মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক শরীফ মঞ্জুর ২২ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

কুষ্টিয়া আদালতের রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসুলি অনুপ কুমার নন্দী জানান, দীর্ঘ সাক্ষ্য শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পৃথক দুইটি হত্যা মামলায় একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ মোট ১০ ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন পরিমাণ অর্থদণ্ড করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০