কুষ্টিয়ায় বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড, দুর্ভোগ চরমে

প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টাকা দুই দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে কুষ্টিয়ায়। ভাদ্রের শেষে এমন বৈরী আবহাওয়ায় নাকাল হয়ে পড়ছে কুষ্টিয়াবাসী। গেল ২৪ ঘন্টার জেলায় বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। এমন আবহাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। বিশেষ করে কষ্টে রয়েছে খেটে খাওয়া মানুষেরা। জীবিকার তাগিদে বৃষ্টি মাথায় নিয়েয় ঘর থেকে বেরিয়েছেন অনেকে। এদিকে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে জেলার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সবশেষ রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, নিম্নচাপের প্রভাবে জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা থেকে রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া কুমারখালি আবহাওয়া অফিস।

গত শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শনিবার থেকে রূপ নেয় ভারী বৃষ্টিপাতে।
এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে জেলার নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। ঘর থেকে খুব একটা বের হয়নি স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। বিপাকে পড়েছেন ছোট বড় গো-খামারি, ডুবেছে ফসলের মাঠ। বিঘ্নিত হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।

দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ এলাকার দেলুয়ার হোসেন নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, রাত থেকে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস হচ্ছে। সকালে গাড়ি নিয়ে বাইরে আসলাম ভাড়ার উদ্দেশ্যে। তবে রাস্তায় তেমন একটা মানুষের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। একই এলাকার জাহিদুল ইসলাম নামের এক খামারি বলেন, বৃষ্টির কারণে গরু-ছাগলের জন্য কাঁচা খাবার আনতে পারছি না। ঠিকমতো খাবারও দিতে পারছি না।

একই উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন ধর্মদহ গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, তাদের এলাকার ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়েছে। মরিচ, টমেটো, কালায় ও তুলার খেত ডুবে গেছে। দৌলতপুর পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মির্জা তুহিন বলেন, রবিবার ভোর থেকে উপজেলা পুরো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দমকা হাওয়ার কারণে বেশ কিছু স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়েছে, দুটি বৈদ্যুতিক পোল ভেঙে গেছ। গাছ উপড়ে পড়েছে তারের ওপর। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করছে।

দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে কলা, তুলা, মরিচ, সবজি ও কালায়ের হিসাব পেয়েছি।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন আর রশিদ রবিবার
(১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টা দিকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টাকা দুই দিন ধরে কুষ্টিয়ায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এই বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এরআগে চলতি বছরের ১২ জুলাই ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। আগামীকাল সোমবার নিম্নচাপ টি দুর্বল হয়ে আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হতে পারে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০