Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:27 am

কুষ্টিয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সেতু

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় স্বেচ্ছাশ্রমে ৭০ ফুট দৈর্ঘ্য ও তিন ফুট প্রস্থের বাঁশের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী যদুবয়রা মাধ্যমিক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার জিকে খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এতে স্থানীয় প্রায় অর্ধশতাধিক যুবক সপ্তাহ ধরে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে এ সেতু নির্মাণ করেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেতুটি আকারে ছোট ও বাঁশের তৈরি হলেও গ্রামের মানুষদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে দুটি বিদ্যালয়ের শত শিক্ষার্থী আর কয়েক হাজার গ্রামবাসীর নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটাতে দিনরাত চলাচল করতে হয়। কিন্তু এটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও স্থায়ী ও টেকসই মেরামত না হওয়ায় বছরে কয়েকবার ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করিয়ে কোনো রকমে কাজ চালিয়ে নেয় ভুক্তভোগীরা। এভাবে বেশ কয়েক বছর ধরে এমন ভাঙাগড়া চলছে।

জানা গেছে, যদুবয়রা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান রাস্তা জয়বাংলা বাজার ও ছাতিয়ান বাজার। প্রধান রাস্তা দুটি বাজারকেন্দ্রিক ও দূরবর্তী হওয়ায় ছাত্রদের জন্য তেমন অসুবিধা না হলেও ছাত্রীদের নানা সমস্যা ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সঙ্গত কারণে শিক্ষার্থীরা জিকে খালের ওপর নির্মিত এ বাঁশের সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পুলিশ ক্যাম্প, যদুবয়রা পশুহাটে চলাচলেরও সহজ রাস্তা এটি। প্রতিদিন শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের দিনরাত সেতুটি দিয়ে চলাচল করতে হয়।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মিনা খাতুন বলেন, জিকে খালের এপারে পশ্চিমে আমার বাড়ি। এ বাঁশের সেতু পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। কিন্তু প্রতি বছর কয়েকবার এটি ভেঙে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী মারিয়া বলেন, প্রতি বছর শিক্ষার্থীরা সেতু ভেঙে পানিতে পরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। এখানে একটি টেকসই সেতু নির্মাণ হওয়া দরকার।

সেতু দিয়ে চলাচলকারী কলেজছাত্র রাসেল হোসেন বলেন, অবশেষে বাঁশের সেতুটি স্থানীয়রা নির্মাণ করেছেন। সবাই এখন সহজে চলাচল করছেন। তবে এখানে স্থায়ীভাবে একটি সেতুর দরকার।

স্থানীয় যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফজলুর রহমান বলেন, যদুবয়রা ভূমি অফিস ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মানুষের চলাচলের প্রধান সহজ সড়ক এটি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী বজলুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৭০ জন ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৯৫০ জন। বাঁশের সেতুটি ভেঙে গেলে ওই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের উপস্থিতির হার কমে যায়।

যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শরিফুল আলম বলেন, সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে মেয়েদের খুব কষ্ট হয়।

তিনি আরও বলেন, এখানে প্রায় ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শিগগির বাস্তবায়ন হবে।