Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 8:41 pm

কুষ্টিয়ায় ২ মাস বন্ধ জিকে প্রকল্পের পাম্প, হুমকিতে বোরো আবাদ

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া : দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প কুষ্টিয়ার গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের পাম্প হাউসের সব কয়টি অকেজো হয়ে পড়েছে। প্রায় দুই মাস ধরে সেচ সরবরাহ বন্ধ থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চারটি জেলার কৃষকরা চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। হুমকির মুখে পড়েছে বোরো আবাদ।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অবস্থিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের তিনটি পাম্পের সাহায্যে পানি দেয়া হতো। এর মধ্যে দুটি পাম্প আগে থেকেই নষ্ট হয়ে গেছে। তৃতীয় পাম্প দিয়ে ৩১ জানুয়ারি ক্যানেলে পানি সরবরাহ শুরু হয়। কারিগরি ত্রুটির মুখে চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি সবশেষ ওই পাম্পটি বন্ধ হয়ে যায়। দ্রুত এসব পাম্প মেরামত করে সেচ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন চাষিরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়াসহ চারটি জেলার সর্বমোট ১৩টি উপজেলায় জিকের সেচ কার্যক্রম বিস্তৃত। প্রকল্পের প্রধান তিনটি খাল, ৪৯টি শাখা খাল ও ৪৪৪টি উপ-শাখা খাল রয়েছে। প্রধান খালের দৈর্ঘ্য ১৯৩ কিলোমিটার। শাখা খালগুলোর দৈর্ঘ্য ৪৬৭ কিলোমিটার ও উপ-শাখা খালের দৈর্ঘ্য হাজার কিলোমিটার। ১৯৫১ সালে পরিচালিত প্রাথমিক জরিপের পর ১৯৫৪ সালে তৎকালীন সরকার প্রকল্পটি অনুমোদন করে।

এদিকে, সেচ বন্ধ থাকায় বোরো চাষের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। সেইসঙ্গে প্রায় দেড় লাখ টন ধান উৎপাদন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রথমদিকে কিছু জমিতে চারা রোপণ করা হলেও, বর্তমানে পানি না থাকায় মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।

সেচ প্রকল্প মেরামত ও বিকল্প ব্যবস্থাপনায় সমস্যা সমাধানের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে শস্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

কুষ্টিয়ার মিরপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। প্রতিবার ক্যানালের পানিতে ধান আবাদ করলেও এ বছর পানি না থাকায় শেলোমেশিনে পানিতে ধানের আবাদ করতে হচ্ছে। ধান আবাদ করতে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার টাকার তেল খরচ গেছে। এখনও প্রায় দুই হাজার টাকার তেল লাগবে।’

সদর উপজেলার জগতি গ্রামের চাষি বাসের আলী বলেন, ‘মাঠের পর মাঠ পড়ে আছে, পানি নাই, বোরিংয়ে পানি উঠতেছে না, যে দুই-একটায় উঠছে সেটাও হাফ পরিমাণ।’

একই এলাকার চাষি রাবুল সেখ বলেন, ‘পানিবিহীন মাঠে কোনো ফসলই হচ্ছে না, ওরা (জিকে কর্তৃপক্ষ) আগে যদি বলত যে, পানি দিতে পারবে না, তাহলে আমরা আগেই অন্য ব্যবস্থা করে নিতাম।’

মিরপুর উপজেলা বারুইপাড়া গ্রামের হাসিনা বেগম বলেন, ‘পানির সমস্যা কি এট্টু-আট্টিক হচ্ছে নাকি? এই যে আমরা গরিব মানুষ পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে চারা দিয়েছিলাম, পানি বিনে সে চারা লাগাতে না পেরে কেটে গরু খাওয়াচ্ছি, এখন আমরা এই ছেলেপেলে নিয়ে খেয়ে বাঁচব সেই ধানটুকুও এখন হবে না, কী খাব তাহলে?’

তিনি আরও বলেন, ‘পানির আশায় থেকে আমার ফসলও বুনতে দিল না, আবার ধানও লাগাতে পারলাম না, বাড়ির গরু-বাছুর, মুরগি পাখির খাওয়ার পানিরও সমস্যা হয়ে গেছে। বোরিংয়েও পানি উঠতেছে না, টিউবওয়েলেও পানি ফেল করেছে, আমারে বাঁচাই দায় হয়ে গেছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি কুষ্টিয়ার উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘চলতি বোরো মৌসুমে এ জেলায় ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এ বছর জিকে সেচ প্রকল্পের সেচ সরবরাহ বন্ধ থাকায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন ব্যাহত হবে।’

এতে প্রায় ৭৭ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ঘাটতির শঙ্কা থাকবে। তবে আগামী আমন মৌসুমে এ ঘাটতি পুষিয়ে নেয়ার কথা জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রশিদুর রহামান বলেন, ‘বৃহৎ এ সেচ প্রকল্পটি মেরামত ও পুনর্নির্মাণ করে চালু করতে প্রকল্প গ্রহণ করে প্ল্যানিং কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এ উন্নয়ন প্রকল্পটির যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে। সেইসঙ্গে সরকার বিদ্যমান সেচ সংকট থেকে কৃষকদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার কথাও ভাবছে বলে জানান তিনি।’

এদিকে রংপুর মহানগরীর কেন্দ্রীয় সিটি বাস টার্মিনাল ও ঢাকা কোচস্ট্যান্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবহন কর্মীরাসহ একটি মহল বাড়তি দামে টিকিট বিক্রির আশায় ঈদের পরের কয়েকদিনের টিকিট আটকে রেখেছেন। নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দাম পেলেই হাত বদল হচ্ছে এসব টিকিটের।

কামারপাড়া ঢাকা কোচস্ট্যান্ডে শ্যামলী পরিবহন, এসআর, নাবিল পরিবহন, হানিফ পরিবহন, এনা পরিবহন, রংধনু, শাহ ফতেহ আলী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি কাউন্টারে টিকিটের জন্য যাত্রীদের ধরনা দিতে দেখা গেছে। কলার বয় এবং গাড়ির স্টাফরা কাউন্টারে টিকিট নেই বলে সাফ জানিয়ে দিলেও, তাদেরই কয়েকজনকে বাইরে টিকিট ম্যানেজ মিশনে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায়।

বোম্বাট নামে এক পরিবহন শ্রমিক জানান, টিকিট পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি। সিট কন্ডিশন খুব ভালো হবে না। তারপরও যদি কেউ পায় সেটা তার ভাগ্য।

মোটর শ্রমিক ফেডারেশন রংপুর মডার্ন শাখার সভাপতি হাবিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মোটর মালিক সমিতির সহযোগিতায় যাত্রীদের সেবা সুন্দরভাবে দেয়া হচ্ছে। আগামী শনি-রোববার পর্যন্ত যাত্রীদের চাপ থাকবে।

ভাড়া বেশি নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভাড়া আমরা বেশি নিচ্ছি না, বহিরাগত কিছু লোক ভাড়া বেশি নিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আল ইমরান বলেন, ‘কালোবাজারিদের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ছাড় নেই। আমরা কোনো অভিযোগ পেলে যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।’