কুষ্টিয়ায় দুই মহাসড়কের ৪২ কিলোমিটারে খানাখন্দ

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় দুই মহাসড়কের প্রায় ৪২ কিলোমিটার এলাকায় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এসব খানাখন্দ ঠিক রাখতে গত আট বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু প্রতি বর্ষায়ই তা ধুয়ে-মুছে যাচ্ছে।

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এ দুটি মহাসড়কে পড়েছে ওই ৪২ কিলোমিটার সড়ক। এ অংশ কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকা দিয়ে গেছে। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ৩২টি জেলার যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে প্রায় ১১ হাজার যান চলাচল করে। সড়ক মেরামতে গত আট বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিবছর গড়ে দুই কোটিরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত কাজ হিসেবে বছরে ৫০ লাখ টাকা করে ব্যয় করা হয়।

গত এক মাসেই প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও যানচালকরা জানান, এভাবে প্রতিবছর কাজ হয়, কিন্তু সড়ক ভালো হয় না। পিচ উঠে সহস্রাধিক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে প্রতিদিন সড়কে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে থাকছে। একটা ট্রাক বিকল হলে সেখানে যানবাহনের দীর্ঘ সারি পড়ে যাচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট। কুষ্টিয়া শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, এ মহাসড়কে কাজের মান খারাপ হচ্ছে। সড়কটিতে দ্রæত ভালোভাবে কাজ না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। এতে মালামাল আনতে সমস্যা হচ্ছে। জেলার সুনাম ক্ষুণœ হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন ও চালকরা জানান, সড়কের এ অংশে গর্ত এতই বেশি যে তা সমান করতে সওজের লোকজন বেশ কয়েক জায়গায় প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটারের ওপরের দুই ইঞ্চি (ওভার লে) তুলে ফেলেছে। সেখানে এখন নতুন করে কাজ করা হবে। অথচ এ ওভার লেটি চার বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল।

স্থানীয় ট্রাকচালক নিয়ামত আলী জানান, এ সড়কে গাড়ির গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারও তোলা যায় না। প্রায় সময়ই স্প্রিং ভেঙে পড়ে থাকতে হয়। বাসচালক আলী হোসেন জানান, কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের অনেক স্থানে ইটের সলিং। যে কারণে খুব সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে হয়। কারণ দ্রæত গতিতে গাড়ি চালালে নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কা খুব বেশি।

স্থানীয় ইজিবাইক চালক মিন্টু আলী জানান, বারখাদা ত্রিমোহনী এলাকার উডল্যান্ড ফ্যাক্টরির সামনের এলাকায় গর্ত থাকার কারণে এবং শহরের জেলা স্কুলের সামনের গর্ত ভরাট করতে ইটের সলিং করা হয়েছে, যা কংক্রিটের স্তরের চেয়ে অনেক উঁচু আবার নিচু। এতে ইজিবাইক চলার সময় একদিকে কাত হয়ে পড়ে। প্রায়ই উল্টে পড়ার ঘটনা ঘটছে। সওজের কর্মকর্তারা জানান, এবড়োখেবড়ো সড়কের কারণে প্রচুর ঝাঁকুনি সহ্য করতে হয়। যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ রাখতেও বেগ পেতে হয়। ফলে দেরি হয় গন্তব্যে পৌঁছাতে। দুর্ভোগ কমাতে বেশি গর্তের জায়গায় পিচ তুলে ফেলা হয়েছে।

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের কুষ্টিয়ার আহবায়ক কে এম জাহিদ জানান, লালন শাহ সেতু এলাকার সড়ক এখনও ভালো রয়েছে। অর্থ খরচ করে যদি বাকি অংশও টেকসই করা যায়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, এ সড়কে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়ার বিকল্প নেই। সড়কের দুই ফুট নিচের অংশ (বেড) পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। সেটা নতুন করে তৈরি করে আবার ওভার লে করলে ঠিক হয়ে যাবে। অন্যথায় এভাবেই চলতে হবে।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০