নিজস্ব প্রতিবেদক: তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কূটকৌশলে দোকানে দোকানে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শনের মাধ্যমে কিশোর ও তরুণদের উৎসাহিত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান স্থাপনে অনৈতিকভাবে প্রণোদনা দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে) সহযোগিতায় গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় বক্তারা এসব অভিযোগ করেন। ‘ভয়েস অব ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট’ আয়োজিত এ সভায় সংস্থার জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
এতে বলা হয়, জরিপকৃত সব রেস্তোরাঁয় আলোকিত রঙিন সজ্জিত বাক্স (যার ভেতর সিগারেটের খালি প্যাকেট) বিজ্ঞাপনের উপকরণ হিসেবে প্রদর্শিত হতে দেখা গেছে। যার সবগুলোতেই ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) সাইন বা লোগো পাওয়া গেছে। ৭৩ শতাংশ রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকায়, শতকরা ২৭ ভাগ রেস্তোরাঁর প্রবেশ বা প্রস্থান পথে এবং রেস্তোরাঁর খাবার পরিবেশন টেবিলের কাছে বিজ্ঞাপন সামগ্রী প্রদর্শিত হচ্ছে। এই বিজ্ঞাপন সামগ্রী প্রদর্শনের জন্য তামাক কোম্পানি রেস্তোরাঁর মালিকদের এককালীন নগদ আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকে। রেস্তোরাঁর অবস্থান অনুযায়ী যার গড় পরিমাণ আট লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা এবং সর্বনি¤œ চার লাখ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়। আর এ নগদ সুবিধা ব্যাংক চেক এবং ব্যাংক ট্রান্সফার এই দুই মাধ্যমে দেয়া হয়। এ সুবিধা নেয়ার সময় ৬০ শতাংশ রেস্তোরাঁ লিখিত চুক্তি করেছে এবং ৪০ শতাংশ মৌখিক চুক্তি করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের উপহার পেয়ে থাকে। যেমন টি-শার্ট, লাইটার, অ্যাশ ট্রে, রান্নার জিনিস, কফি মগ, কম দামে তামাকজাত দ্রব্য, প্লেট বা গ্লাস, কভিড প্রতিরক্ষামূলক সামগ্রী, নতুন সিগারেট ব্র্যান্ডের বিনামূল্যে নমুনা ইত্যাদি।
সভায় বক্তব্য দেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহল হক, সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের অতিরিক্ত সচিব এবং সমন্বয়কারী হোসেন আলী খোন্দকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল ও অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ।