কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় কাউছারের সাফল্য

স্কুলজীবন থেকেই উদ্ভাবনের প্রতি তার প্রবল ঝোঁক ছিল। তবে সুযোগ-সুবিধার অভাবে ভালোলাগা কাজ করলেও এ নিয়ে তেমন কিছু করা হয়ে ওঠেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে সে সুযোগটা হাতের নাগালে চলে আসে। অংশ নেন অলিম্পিয়াডসহ নানা প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে। এর যথার্থ ব্যবহার করেন, অল্প দিনেই সফলতা দিয়ে যায় হাতছানি। নামের পাশে যোগ করেন বেশ কয়েকটি অর্জন।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফলিত গণিত বিভাগের পঞ্চম আবর্তনের শিক্ষার্থী আহমেদ কাউছারের গল্প এটি। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় জš§গ্রহণ করেন তিনি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এ পর্যন্ত ছয়টি পুরস্কার অর্জন করেন কাউছার। এ অর্জনের শুরুটা স্প্রিংগার আয়োজিত সম্মেলনে শ্রেষ্ঠ গবেষণা অ্যাওয়ার্ড অর্জনের মধ্য দিয়ে। ওই সম্মেলনে তিনি নতুন একটি অ্যালগরিদমের ওপর গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। নিউম্যারিক্যাল ইন্টারপোলেশন মেথডকে রিগ্রেশনের কাজে ব্যবহার করা যাবে এ অ্যালগরিদমকে। এরপর তিনি পান কম্পিউটার ভিশনের ওপর গবেষণার জন্য শ্রেষ্ঠ গবেষণা অ্যাওয়ার্ড। তিনি কম্পিউটার ভিশন ও অটোমেটেড প্রসেসের ওপর গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, যেটি ক্রিকেট খেলায় আম্পায়ারের কাজ করবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের আইইইই সম্মেলনে পান এ অ্যাওয়ার্ডটি।

পরে কাউছার বাংলা ল্যাংগুয়েজ টুল কিট ডেভেলপ করেন, যা দিয়ে সহজে বাংলা ভাষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনেক কাজ করা যাবে। এ ডিভাইসটি বাংলা বুঝবে। রোবট বাংলায় কথা বলবে। এটি ‘রবি আর ডেঞ্জার ২.০-তে ইনভেস্ট পাওয়ার’-এ বিজয়ী হয়েছিল। গত বছরের ২২ নভেম্বর ভারতের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর গবেষণাপত্র উপস্থাপন করে আউটস্ট্যান্ডিং রিসার্চের জন্য তিনি বেস্ট রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড পান। এখানে তিনি ‘ডিপ নিউরাল নেটওয়ার্ক ও অপটিমিজমথ’-এর ওপর নতুন অ্যালগরিদম নিয়ে করা রিসার্চ পেপার উপস্থাপন করেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।

সম্প্রতি তিনি ও তার টিম বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড সংলাপের অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বাংলা চ্যাটবটের জন্য। এ চ্যাটবটটি বাংলায় কথা বলবে, বুঝবে ও গান শোনাবে। এছাড়া কম্পিটিশন অ্যানালাইসিসের জন্য তিনি কম্পিটিটিভ অ্যালগরিদম আবিষ্কার করেন, যেটি দিয়ে বিজনেস বা ইকোনমিকসের কমপিটিশন অ্যানালাইসিস করা যাবে।

এখন কাউছার ইমপ্যাক্ট লার্নিং নামের একটি নতুন মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম নিয়ে কাজ করছেন। এই তরুণ গবেষক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সায়েন্টিস্ট হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে অনেক কঠিন কাজ সহজে করা যায়। আমি এটি নিয়ে কাজ করতে চাই। এ বিষয়ের ওপর গবেষণা করে দেশ ও বিশ্বকে প্রযুক্তিতে আরও এগিয়ে নিতে ইচ্ছুক আমি।

  মো. ফারহান

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০