শেয়ার বিজ ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে চীন, ইউরোপ ও অন্য কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তার দেশের কৃষকরাও। এজন্য কৃষকদের সহায়তায় এক হাজার ২০০ কোটি ডলার দেওয়ার পরিকল্পনা করছে মার্কিন প্রশাসন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ পরিকল্পনা থেকে বোঝা যাচ্ছে ট্রাম্প তার শুল্কারোপের সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন। খবর বিবিসি।
আমদানি পণ্যে ট্রাম্পের শুল্কারোপের জবাবে কয়েকটি দেশ সয়াবিনসহ মার্কিন কৃষিপণ্যে শুল্কারোপ করেছে। এতে নতুন পরিকল্পনায় যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাদের ভর্তুকি দেওয়া হবে এবং অবিক্রীত ফসল সরকারিভাবে কিনে নেওয়ার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গত মঙ্গলবার কানসাস সিটিতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প তার শুল্কারোপের বিষয়ে দৃঢ়তার কথা ব্যক্ত করে বলেন, কৃষকদের চিন্তার কিছু নেই। বাণিজ্যযুদ্ধে তাদের বড় লাভ হবে। শুধু কিছুদিন ধৈর্য ধরতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সেক্রেটারি সনি পারডু বলেন, ‘এ উদ্যোগের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদে সমস্যার সমাধান হবে। এতে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যনীতি নিয়ে মুক্তভাবে কাজ করতে পারবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।’ তিনি জানান, এ সাহায্য তহবিল এএসডিএর কমোডিটি ক্রেডিট করপোরেশন দেবে। এর জন্য কংগ্রেসের অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
এ পরিকল্পনার কথা এমন সময় জানালেন যখন কৃষি অধ্যুষিত কয়েকটি রাজ্য থেকে কৃষক, আইনজীবী এমনকি রিপাবলিকান অনেকেই ট্রাম্পের শুল্কনীতির সমালোচনা করে আসছিলেন। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এসব রাজ্যে ট্রাম্পের বেশি সমর্থক ছিল।
গত ৬ জুলাই ৩৪ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ কার্যকর করে ট্রাম্প প্রশাসন। পাল্টা জবাবে চীনও সমমূল্যের পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করে। চীনের অভিযোগ, ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়মাবলির লঙ্ঘন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব অর্থনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছে।
ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদ নীতির আওতায় গত মার্চে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর যথাক্রমে ২৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ তিনি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয় ১ জুন। এতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ), কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ঘনিষ্ঠ মিত্রদের বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে ইইউ। ২৮০ কোটি ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যে আমদানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি ২২ জুন থেকে কার্যকর হয়। পাল্টা হিসেবে এক হাজার ২০০ ডলারের মার্কিন পণ্যে শুল্কারোপ করেছে কানাডাও।
সয়াবিনসহ একাধিক মার্কিন কৃষিপণ্যে শুল্কারোপ করায় গত এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিনের দাম কমেছে ১৫ শতাংশ। মার্কিন কৃষি বিভাগ বলছে, বাণিজ্যযুদ্ধে দেশটির কৃষি খাতে ১১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।