নিজস্ব প্রতিবেদক: বিনিয়োগ মন্দার দুঃসময়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ফ্রুট গার্ডেনিং প্রকল্প। ফলচাষে আগ্রহী কৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান পেতে বেছে নিচ্ছেন এ প্রকল্পের অর্থায়ন। ফলে গত বছরের ডিসেম্বরে চালু হওয়া এ প্রকল্পের আওতায় ব্যাংকটির বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে।
ব্যাংকের লোকাল অফিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এটিএম শহিদুল হক বলেন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি খাত সম্প্রসারণ, খাদ্য নিরাপত্তায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের উদ্দেশ্যে এ প্রকল্প চালু করে। ফলচাষে সরাসরি জড়িত ব্যক্তি, উদ্যোক্তা বা কৃষক এ প্রকল্প থেকে অর্থ পেতে পারে। গত তিন মাসে এ প্রকল্পে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। গ্রাহকের চাহিদার কথা ভেবে এবং ব্যাংকের বিনিয়োগ পরিধি আরও বাড়াতে এ প্রকল্প অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, কৃষিনির্ভর এ দেশের অর্থনীতির প্রাণই কৃষি ও কৃষক। কিন্তু গ্রামের অনেক কৃষক অর্থের অভাবে ইচ্ছা থাকলেও চাষাবাদ করতে পারে না। ইসলামী ব্যাংক সেসব কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। যা সার্বিকভাবে দেশের জিডিপিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেওয়া অর্থ অনর্থক হয় না। কৃষকরা তাদের অর্থ ও শ্রমের ফল তুলে আনতে পারে। তাই ব্যাংকের বিনিয়োগ করার জায়গাটিও ভালো হয়েছে বলে বিবেচিত হচ্ছে।
জানা গেছে, আম, লিচু, কলা, পেয়ারা, পেঁপে, সফেদা, আমড়া, আনারস, তরমুজ, লেবু, জাম্বুরা, কমলালেবু, বরইসহ নানা ধরনের ফলচাষে এ প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা অর্থ নিতে পারছেন। ইসলামী ব্যাংক বিশেষে তিনটি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পের আওতায় অর্থায়ন করছে। নতুন বাগানের ক্ষেত্রে বাই মুয়াজ্জাল, বাগানের আন্তঃপরিচর্যার জন্য বাই সালাম ও সাথী ফসল বা মিশ্র শস্যের ক্ষেত্রে বাই সালাম পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করছে। সেক্ষেত্রে ফলচাষে আগ্রহী একজন কৃষক ন্যূনতম এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) আবাদি জমি থাকলেই এ প্রকল্পের অর্থ নিতে পারছে।
বাই মুয়াজ্জাল পদ্ধতিতে গ্রাহক ভূমির প্রকৃত মালিক হলে ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাচ্ছেন। আর ভূমি ইজারার ক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। তবে বাই সালাম পদ্ধতিতে ভূমির প্রকৃত মালিক বা ইজারার উভয়ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
ব্যাংক দুই ধরনের বিনিয়োগ সীমায় এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। যার প্রথম পদ্ধতি হচ্ছে, দুই থেকে পাঁচ বছরের জন্য (গেস্টেশন পিরিয়ড ব্যতীত) বাই মুয়াজ্জাল পদ্ধতিতে অর্থায়ন করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এক বছর (আবর্তনভিত্তিক) বাই সালাম পদ্ধতিতে অর্থায়ন করা হচ্ছে।