কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা আজ

মেহেদী হাসান: দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সরকারের বাজেট নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বরাবরের মতো এবারও কৃষিঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ বুধবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, কৃষিঋণ বিতরণে বরাবরের মতো এবারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে ব্যাংকগুলো। গেল অর্থবছরের জন্য ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে অর্থবছরের ১১ মাসেই ১৯ হাজার ৬২৩ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি বিদেশি ফল ও ফসল চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য কৃষিঋণ নীতিমালায় নির্দেশনা থাকবে।
সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্রীয় আটটি ব্যাংকের জন্য নির্ধারিত ছিল ৯ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। অর্থবছরের ১১ মাসে ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৯ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় সাড়ে ৯৬ শতাংশ। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর জন্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। অর্থবছরের এক মাস হাতে রেখেই ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৬ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। বছর শেষে দেখা গেছে, বিতরণ হয়েছে ২০ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। ফলে গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা আগের অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। তাই সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর জন্য কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অর্থবছরের ১১ মাস শেষে পিছিয়ে ছিল ১১টি ব্যাংক। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য কৃষিঋণ বিতরণে এবি ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯৫ কোটি টাকা। অর্থবছরের ১১ মাসে ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ২০৬ কোটি টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩৮ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিতরণ করেছে মাত্র ৪৩ কোটি টাকা। এছাড়া মেঘনা ব্যাংক বিতরণ করেছে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩১ শতাংশ, মধুমতি ব্যাংক সাড়ে আট শতাংশ, এনসিসি ব্যাংক ৩০ শতাংশ, এনআরবি কমার্স ব্যাংক ৬৩ শতাংশ, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ২৯ শতাংশ, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক সাড়ে ৩৮ শতাংশ, ফারমার্স ব্যাংক মাত্র এক শতাংশ এবং ইউনিয়ন ব্যাংক ২৭ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে এ সময়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ ঋণ পল্লী অঞ্চলে বিতরণ করতে হবে। পল্লী অঞ্চলে অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করা ও খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নির্দেশনা জারি করে। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যবস্থা চালু করে এর সফলতাও পায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিতরণ হয় প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০