কৃষিঋণ বিতরণে ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিডের মধ্যে ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণ কমলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বাড়তে শুরু করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে কৃষি খাতে ঋণের হার আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেড়ে ১০ হাজার ৭৭৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা হয়েছে। ব্যাংকগুলো এখন কৃষি খাতে গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি অনেকেই শিল্প খাতে চাকরি হারিয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষি খাতের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছেন। এটি সার্বিকভাবে কৃষিঋণ বণ্টনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া এ খাতের ঋণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম। পাশাপাশি আদায় হার অনেক ভালো।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য কৃষি খাতে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ লক্ষ্য নির্ধারণ করে, যার মধ্যে জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। এক বছর আগে একই সময়সীমার মধ্যে অর্জন ছিল লক্ষ্যমাত্রার ৩৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, প্রথম পাঁচ মাসে ১০ হাজার ৭৭৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিতরণ চার হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিশেষায়িত ব্যাংগুলো বিতরণ করেছে পাঁচ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। ব্যাংকারদের মতে, কৃষি?ঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায়ের হারও সন্তোষজনক। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কৃষিঋণ আদায় হয়েছে ১০ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করবে ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। আর দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করবে ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। প্রথম পাঁচ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৪৫ দশমিক ১২ শতাংশ বা চার হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। গতবছরের একই সময়ে বিতরণ করা হয়েছিল তিন হাজার ৮৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকা বা লক্ষ্যের ৩৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার কারণে পল্লি অঞ্চলের কৃষক-উদ্যোক্তারা কাজে বের না হওয়ায় ঋণও নিতে পারেননি। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে প্রাণঘাতী করোনা ভয়ংকর আকার ধারণ করে। এর ফলে কমে গিয়েছিল পল্লিঋণ বিতরণের হার। সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমে যাওয়ায় আবারও বাড়ছে কৃষিঋণ।

প্রসঙ্গত, কৃষি খাতের জন্য নতুন করে তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনা মহামারি থেকে উদ্ভূত অর্থনৈতিক মন্দা থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কৃষিঋণ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এ প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ব্যাংক থেকে চার শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবে কৃষক। ব্যাংক এ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে এক শতাংশ হারসুদে তহবিল পাবে। এর সঙ্গে আরও তিন শতাংশ বাড়তি নিয়ে তারা ঋণ বিতরণ করতে পারবে। ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ এ ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে ১৮ মাসের মধ্যে। গত বছরের এপ্রিলে (প্রথম ধাপে) পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে প্রায় ৯২ শতাংশ বিতরণ করা হয়েছে। এই তহবিলের মেয়াদ জুনে শেষ হয়েছে। কৃষকদের সহায়তার লক্ষ্যে নতুন এ প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০