তানিউল করিম জীম, বাকৃবি: কৃষিকে সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর একটি শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এজন্য সবাইকে প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহী করে তুলতে হবে। কৃষকের সবার হাতে হাতে প্রযুক্তি তুলে দিতে হবে। কথাগুলো বলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল£ ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংয়ে বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় প্রথমবারের মতো এক হাজার থেকে এক হাজার দুইশ’র মধ্যে স্থান করে নিয়েছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। এ উপলক্ষে বাকৃবি প্রশাসন একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বাকৃবি আগে শুধু জাতীয় পর্যায়ে সেরা ছিল। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিকভাবে সেরা হয়েছে। এজন্য আমরা সবাই গর্ববোধ করছি। কৃষির আজ যে উন্নয়ন ঘটেছে, সেটি বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে শুরু হয়েছে। বর্তমান কৃষিতে সেনসর প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। এতে ফসলের কতটুকু পানি ও সার লাগবে সেটি আমাদের যন্ত্র বলে দেবে। আবার পুকুরে মাছের ঘনত্ব নির্ণয়, মাছের বৃদ্ধি নির্ণয়, খাবারের পরিমাণ নির্ণয় প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জানতে পারব। এতে বাড়বে উৎপাদন, কমবে সময় ও শ্রম।
বাংলাদেশের তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবার বিশ্ব র্যাংকিংয়ে স্থান পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি হচ্ছেÑবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি মানদণ্ডের ভিত্তিতে বাংলাদেশে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম হয়েছে বাকৃবি।
প্রতিবছর টাইমস হায়ার এডুকেশন বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা প্রকাশ করে। ২০২১ সালে ৯৩টি দেশের প্রায় ১০ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এক হাজার ৬৬২টির তালিকা প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। জাতিসংঘ-নির্ধারিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি অর্জনের ভিত্তিতে গবেষণা, আউটরিচ ও শিক্ষণের মানদণ্ডে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, এ সাফল্যে আমরা উচ্ছ্বসিত। ভবিষ্যতে বিশ্বের সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান করে নিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাকৃবি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আধুনিক কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে যথোপযুক্ত প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও কৃষকদের মাঝে তা সম্প্রসারণ করে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে অগ্রগামী ভূমিকা রাখছে। ছয় দশকে বাকৃবির গ্র্যাজুয়েটরা কৃষির আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছেন। এ কারণে দেশ আজ ক্রমবর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে অসামান্য সাফল্য লাভ করতে পেরেছে।
তিনি আরও বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাকৃবি কৃষি ক্ষেত্রে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়ে
তুলতে অগ্রণী ভূমিকা অব্যাহত রাখবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চা ও মেধার বিকাশ এবং সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সুপরিকল্পিত দিকনির্দেশনা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আন্তরিক সহযোগিতা প্রশংসনীয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসানের সভাপতিত্বে এ ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এমএ সাত্তার মণ্ডল এবং ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিভাগের অনেক শিক্ষক।