Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 10:57 pm

কৃষিজমি রক্ষায় গ্রামে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে হবে  

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রথমবারের মতো রাজধানীতে শুরু হয়েছে গৃহায়ন অর্থায়ন মেলা-২০১৭। সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত।

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহযোগিতায় এ মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি)।

মেলায় ৩১টি আবাসন, সাতটি ব্যাংক ও আর্থিকসহ আবাসন সম্পর্কিত ৪৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। মেলা উপলক্ষে প্লট ও ফ্ল্যাট কিনতে ছাড় দিচ্ছে অনেকেই। এছাড়া ঋণেও কিছুটা ছাড় পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উম্মুক্ত থাকবে এ মেলা। জাতীয় গৃহায়ন নীতি-২০১৬, রূপকল্প-২০২১ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টকে সমন্বিত করে বর্তমান সরকার সবার জন্য আবাসন ঘোষণাকে সফল করতে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আবাসন চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ চাহিদা পূরণে গ্রামে অপরিকল্পিতভাবে কৃষিজমি নষ্ট করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। কৃষিজমি সুরক্ষা করা না গেলে আগামীতে দেশ খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পড়বে। তাই শুধু শহরে নয়, গোটা দেশের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন অধিদফতর এ পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে। পারিবারিকভাবে সম্পদ ও জমিজমা অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন হলেও কৃষিজমি রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। অংশীদারদের বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে পৈতৃক ভিটায় চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তলাসম্পন্ন বাড়ি নির্মাণ করতে হবে। এ বিষয়ে ঋণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনকে তাদের কর্মপরিধি বাড়াতে হবে।

মন্ত্রী জানান, শহরের বস্তিবাসীর জন্য ভাড়াভিত্তিক অ্যাপার্টমেন্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বস্তিবাসীর জন্য ৫৫০টি অ্যাপার্টমেন্টের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন। বর্তমান সরকার গৃহায়নকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করছে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল একটি দেশে সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করা একটি কঠিন কাজ। আমাদের দেশের শতকরা ৭২ শতাংশ লোক গ্রামে বসবাস করে এবং মোট গৃহের ৮১ শতাংশই গ্রামে অবস্থিত। এ ৮১ শতাংশের ৮০ শতাংশই নিম্নমানের কাঠামো।

সবার জন্য আবাসন নিশ্চিতে ব্যাংকঋণের সুবিধা বাড়ানো এবং সহজ শর্তে এক অংকের ডিজিটের সরল সুদ নির্ধারণের আহবান জানান মন্ত্রী। তিনি জানান, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় স্বল্পমূল্যে ইতোমধ্যে আট হাজার অ্যাপার্টমেন্ট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বিভিন্ন জায়গায় ১৫ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট পাইপলাইনে আছে।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন, বিএইচবিএফসির চেয়ারম্যান শেখ আমিনউদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকে।