কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে জোর প্রধানমন্ত্রীর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: দেশে যে ১০০ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে, তার মধ্যেই কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা এবং সংরক্ষণাগার নির্মাণের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ভিডিও কনাফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। খবর: বিডিনিউজ।

কৃষিজমি বাঁচাতে যত্রতত্র শিল্পকারখানা যাতে গড়ে না ওঠে, সে লক্ষ্য নিয়েই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। কৃষিমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার কথাটা হচ্ছে, যে অঞ্চলে যে জিনিসটা সব থেকে বেশি উৎপাদিত হচ্ছে আমাদেরÑএটা কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবেও আছে যে, কোন তরকারিটা কতটুকু টেমপারেচারে ভালো থাকবে, সেভাবে আমাদের সংরক্ষণাগার গড়ে তুলতে হবে, যাতে পণ্যটা যখনই কৃষকরা করবে, সঙ্গে সঙ্গে যেন বাজারজাত করতে পারে এবং সংরক্ষণ করতে পারে।’

কৃষিপণ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। সেজন্য এ কাজে অর্থায়নের টাকা আলাদা করে রাখা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলেই আলাদা প্লট নিয়ে এই কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করা অথবা সংরক্ষণাগার তৈরি করার সুযোগ আছে। আর এটা তৈরি করার জন্য যে ফান্ড লাগবে, সেই ফান্ড আমি দেব।’

আমদানিনির্ভর ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের সব সময় এটা মাথায় রাখতে হবে যে, আমরা কখনও আমদানিনির্ভর হব না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াব। একটা-দুটা পণ্যের ওপর নির্ভর করব না। রপ্তানিপণ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমি মনে করি কৃষিপণ্য সব থেকে বেশি অবদান রাখতে পারে। সেদিকে আমরা ব্যবস্থা নিই।’

বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে কভিড মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ডিজেল, এলএনজি, সার, ভোজ্যতেল, গমসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করতে হয়। সেক্ষেত্রে আমি অনুরোধ করব, আমাদের নিজেদের পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আর এরই মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। জাতিসংঘের নেতৃত্বে পণ্য কেনার উদোগ নিয়েছি। যেমন কানাডা থেকে যাতে আমরা গম আনতে পারি বা আমরা সার আনতে পারি, সেই ব্যবস্থা। কিন্তু এখন আমরা রাশিয়া থেকে বা ইউক্রেন থেকে, বেলারুশ থেকে, বিভিন্ন জায়গা থেকে সব পণ্য আনতে পারব। এজন্য আমাদের জাতিসংঘের জেনারেল সেক্রেটারি একটা উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি যে চ্যাম্পিয়ন গ্রুপ, সেই গ্রুপে আমরা ছিলাম। আমি যে আছি, কাজেই সেভাবে আমরা একটা ব্যবস্থা নিতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি পরিবহনের খরচও অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে। তারপরও দেশের মানুষের খাদ্যচাহিদা পূরণে কৃষকদের ভর্তুকি দেয়া অব্যাহত রেখেছে সরকার। 

দেশের কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও কৃষকদের উন্নয়নে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেয়া নানা উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কভিড সংক্রমণ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে সবাইকে টিকা নেয়ারও আহ্বান জানান।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার বিতরণ করেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং কৃষি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে শারমিন আক্তার তার অনুভূতি প্রকাশ করেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাফল্য ও এর কার্যক্রমের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০