Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:20 pm

কৃষি উন্নয়নে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াবে ভারত ও নেপাল

শেয়ার বিজ ডেস্ক : কৃষি খাতের উন্নয়নে ভারত ও নেপাল দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াতে একমত হয়েছে। ভারতে তিন দিনের সফরে গিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি  দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এ বিষয়ে একমত হন। দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই শর্মা ওলির প্রথম বিদেশ সফর। খবর ইকোনমিক টাইমস।

দুই দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষক, ভোক্তা ও বেসরকারি খাতকে সুবিধা দিতে ভারত ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি উৎপাদন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণে পারস্পরিক সহযোগিতায় নিজেদের দৃঢ়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদি ও ওলি কৃষি খাতে নতুন অংশিদারিত্ব শুরু করতে যাচ্ছেন। তারা এ খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয়েছেন।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  কে পি শর্মা ওলি ঘোষিতভাবেই চীনপন্থি। নির্বাচনী প্রচারে নেপালের গ্রামে-গ্রামান্তরে ভারতবিরোধী কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছিল ওলির দলের জনসভাগুলোতে। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর নিজের একাধিক পদক্ষেপ এবং কথাবার্তায় ওলি বুঝিয়ে দিয়েছেন, চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নেপাল বাড়াবে। কিন্তু ভারত সফররত ওলি এখন পর্যন্ত যা কিছু বললেন এবং করলেন, তাতে স্পষ্ট, নয়াদিল্লিকে সম্পূর্ণ দূরে ঠেলার পথে হাঁটতে পারছেন না তিনি।

সব দিক দিয়েই স্থলভাগে ঘেরা দেশ নেপাল। সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে নেপালের যোগাযোগ নেই। ভৌগোলিক কারণে নেপালের সমুদ্রবন্দরের প্রয়োজনীয়তা মেটানো চীনের পক্ষে কঠিন। চীনের কোনো বন্দর যদি ব্যবহার করতে চায় নেপাল, তাহলে যতখানি ঘুরপথে যাতায়াত করতে হবে, অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক হিসেবে তা লাভজনক নয়। পণ্য পরিবহনের জন্য নেপালের সামনে সবচেয়ে লাভজনক পথ ভারতীয় সমুদ্রবন্দরগুলো ব্যবহার করা। ভারত সফরে এসে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সেই আশ্বাস পেয়ে গেলেন। ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথ এবং সমুদ্রবন্দর নেপাল ব্যবহার করতে পারবে, দিল্লি ও কাঠমান্ডু এমন সমঝোতায় পৌঁছাল। সমঝোতা শুধু জলপথেই থেমে থাকল না, রেলপথেও দৌড়াল। ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ নেপালের রাজধানী পর্যন্ত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে, এমনটাই স্থির হয়েছে।

নেপালের সঙ্গে রেল যোগাযোগ গড়ে তোলার পথে পা বাড়িয়েছে চীনও। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’-এ অংশগ্রহণ করছে নেপাল। কাঠমান্ডুর এসব পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে নয়াদিল্লির মাথাব্যথা বাড়িয়েছিল। এবার নয়াদিল্লির পদক্ষেপ বেইজিংয়ের মাথাব্যথা বাড়াবে। নেপালের জন্য ভারত নিজের জলপথ খুলে দেবে এবং ভারতীয় রেলকে নেপাল কাঠমান্ডু পর্যন্ত স্বাগত জানাবে, এমন খবর চীনের অস্বস্তি বাড়াবেই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সফরে আসার আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর একটি সাক্ষাৎকার বিতর্ক বাড়িয়েছিল। কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন নেপাল ভারতের চেয়ে চীনের দিকে ঝুঁকে থাকতেই বেশি পছন্দ করবে, এমন আভাস মিলেছিল। তবে দিনের শেষে ভারসাম্যের বার্তা গেল কাঠমান্ডুর কাছে। অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস নয়, আবার দূরে ঠেলাও নয় নেপালের জন্য ভারতের নীতি আপাতত বুঝিয়ে দেওয়া হলো।