কৃষি ব্যাংকের আমানতের টাকায় কোটিপতি কর্মকর্তা

নজরুল ইসলাম: ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) থাকার সুবাদে নিজেই হাতিয়ে নিলেন ব্যাংকের টাকা। সেজন্য খুলেছেন ভুয়া ঋণ হিসাব। সুদ ব্যয়ের খাতের বিভিন্ন উপখাত ডেবিট দেখিয়ে দুটি সিসি ও একটি সঞ্চয়ী হিসাবে স্থানান্তর করেছেন সেসব টাকা। এভাবে হাতিয়ে নেন ব্যাংকের দুই কোটি ৩৫ লাখ ২৯ হাজার ৩২৩ টাকা। এসব করে ধরাও খেয়েছেন তিনি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষই তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়েছিল। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছে। তার নাম নিকোলাস চাকমা (পিএফ নম্বর-এন ১৫৩৪)। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে গতকাল একটি মামলা দায়ের করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় রাঙামাটিতে এটি দায়ের করা হয়েছে।

এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের খাগড়াছড়ির দীঘিনালা শাখায় ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন নিকোলাস চাকমা। তিনি ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত ওই শাখার আমানতের ওপর সুদ ব্যয়ের খাতের (১৩৩/৩৭) বিভিন্ন উপখাত ডেবিট করে এক কোটি ৩৭ লাখ ৫৫ হাজার ১০১ টাকা দুটি সিসি ও একটি সঞ্চয়ী হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেন। ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল বিধিবহির্ভূতভাবে দুটি ভুয়া পার্সোনাল ঋণ হিসাব খুলে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সিসি হিসাব নম্বর ১১৫-এর মাধ্যমে এবং একটি ভুয়া সিসি হিসাব খুলে ৬০ লাখ ৭৪ হাজার ২২২ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে সব মিলিয়ে তিনি দুই কোটি ৩৫ লাখ ২৯ হাজার ৩২৩ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরে তাকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের খাগড়াছড়ির আঞ্চলিক কার্যালয়ের মুখ্য কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। তার বিরুদ্ধে দিঘিনালা থানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একটি মামলা দায়ের করেন। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে সেটি দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গতকাল মঙ্গলবার একটি মামলাও করা হয়। নিকোলাস চাকমা এখন কারাগারে। তার বাড়ি খাঘড়াছড়ির দিঘিনালার হেডম্যানপাড়ায়।

দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তদন্তকালে আর কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে সেসবও আমলে নেয়া হবে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, নিকোলাস চাকমা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের খাগড়াছড়ি শাখা থেকেও দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সে বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য কমিশনের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে সেটিরও অনুসন্ধান করা হবে। অনুসন্ধান শেষে আলাদা আরও একটি মামলাও দায়ের করা হতে পারে।

দুদকের মামলায় আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শওকত আলী খান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি জামিন চেয়েছিলেন, আদালত জামিন দেননি। দুদকও মামলা করেছে।’

খাগড়াছড়ি শাখার দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে শওকত আলী খান শেয়ার বিজকে আরও বলেন, ‘সে বিষয়েও আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০