নিজস্ব প্রতিবেদক: সংবাদকর্মীদের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ যুগ্ম পরিচালক থেকে নির্বাহী পরিচালক পর্যন্ত অন্তত ১০ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ পূর্ববর্তী গভর্নরদের কোনো মেয়াদে দেখা যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন পদক্ষেপের কারণে আতঙ্কিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং ইনস্পেকশন, ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন, ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এবং ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্টসহ বিভিন্ন স্তরের ১০ কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়। কেন সাংবাদিকদের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করা হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে ওইসব কর্মকর্তাকে। এছাড়া পরিচালকদের মাধ্যমে অন্য কর্মকর্তাদের কড়া বার্তা দেয়া হয়। এর ফলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে।
তবে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করছিলেন, তা প্রমাণিত হয়নি বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জানা যায়, ফরেক্স রিজার্ভ, বৈদেশিক মুদ্রার বাজার অস্থিরতা এবং সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং নানা সমস্যা নিয়ে দেশের বিভিন্ন মিডিয়া সংবাদ প্রকাশ করার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ডেপুটি গভর্নর তার কর্মকর্তাদের প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অন্যান্য ব্যাংক উভয়ের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন। তবে কেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ পক্ষ থেকে এ ধরনের শোকজ নোটিশ জারি করা হয়েছে, তা আমি জানি না।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, এ অনুশীলন দেশ ও দেশের অর্থনীতির জন্য খুব একটা ভালো লক্ষণ নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা আগে দেখিনি। কিছু প্রভাবশালী গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেন।
এর আগে নতুন গভর্নর যোগদানের কিছুদিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকতে সময় বেঁধে দেয়া হয়। এর প্রতিবাদে সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ নীতিমালা প্রকাশের একটি সংবাদ সম্মেলন বয়কট করে। পরবর্তী সময়ে এ সময়সীমা প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংক খাতের কোনো খবর যাতে প্রকাশ না পায়, সেজন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো প্রকার কথা না বলার জন্য অলিখিতভাবে কর্মকর্তাদের বার্তা দিয়ে রেখেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রভাবশালী ডেপুটি গভর্নর।