মানবদেহের যেসব কোষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়, তা ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ধ্বংস করার পদ্ধতির নামই হলো কেমোথেরাপি চিকিৎসা। অনেকেরই কেমোথেরাপি নিয়ে ভুল ধারণা ও ভয় আছে।
কেমোথেরাপি শুধু ইনজেকশন নয়, নানাভাবে দেয়া যায়। যেমন মুখে খাবার ওষুধের মাধ্যমে, শিরায়, ধমনিতে, মাংসে, ত্বকের নিচে, শরীরে বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি, ফুসফুসের বা পেটের আবরণীতে এবং স্পাইনাল কর্ডের বহিরাবরণীতে এই ওষুধ পুশ করা যায়। কেমোথেরাপি চিকিৎসা গ্রহণের আগে যা প্রয়োজন, তা হলো চিকিৎসার সম্পূর্ণ কোর্স বা চিকিৎসার পরিকল্পনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেয়া এবং কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা ও মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা। ক্যানসার কোষ ধ্বংস করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ। এসব ওষুধের তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। ক্ষতির তুলনায় লাভের পাল্লা ভারী হলেই কেবল কেমোথেরাপির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ক্যানসার প্রতিরোধে: ক্যানসার চিকিৎসার যাত্রা জটিল ও বেদনাদায়ক। তাই ক্যানসার যাতে না হয়, সে রকম জীবনযাপনে অভ্যাস করাই সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। ক্যানসার প্রতিরোধে পর্যাপ্ত সবজি ও ফল খান। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাবেন না। স্বল্প ওজন বা অতিরিক্ত ওজন পরিহার করুন। পেশাগত কাজকর্ম যদি এমন হয়, তেমন নড়াচড়া করতে হয় না, তাহলে প্রতিদিন এক ঘণ্টা দ্রুতগতিতে হাঁটুন বা এমন কোনো ব্যায়াম করুন, যাতে শরীর ঘামে। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের দানাশস্য ও শিমজাতীয় খাবার খান। মদ্যপান করবেন না।
লাল মাংস দৈনিক তিন আউন্সেরও কম খাবেন। চর্বিজাতীয় খাদ্য গ্রহণ সীমিত রাখুন। ভেজিটেবল তেল ব্যবহার করুন। লবণাক্ত খাবার, রান্নার লবণ ও খাবার সময় লবণ ব্যবহার সীমিত করুন। ছত্রাকযুক্ত খাবার খাবেন না। পচনশীল খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ ব্যবহার করুন। কোনো ধরনের পোড়া খাবার খাবেন না। ধূমপান করবেন না ও তামাক পাতা সেবন করবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান ও বিশ্রাম নিন। শিল্পকারখানার ক্যানসারবাহক উপাদান ও তেজস্ক্রিয়তার ক্ষতিকর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
ডা. এটিএম কামরুল হাসান
অনকোলজিস্ট ও ক্যানসার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
সিএমও, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা