বাবা-মায়ের সঙ্গে কৈশোরে দ্বন্দ্ব-সংঘাতগুলো সাধারণত শুরু হয় পড়ালেখা নিয়ে।
বাইরে ঘোরাঘুরি, টিভি কিংবা মোবাইল ফোনের সামনে অতিরিক্ত সময় কাটানো, বন্ধুদের সঙ্গে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার জন্যও হতে পারে। মন দেওয়া-নেওয়াজনিত কারণও একটি। তবে তা সাংঘাতিক হয়ে ওঠে মাদকদ্রব্য নেওয়া শুরু হলে। একই সঙ্গে পোশাক-পরিচ্ছদ, রূঢ় আচরণ প্রভৃতি বিষয়েও সংঘাত দেখা দিতে পারে
কৈশোর এমনই এক সময়। দুরন্ত। স্বাধীন। মা-বাবা কিংবা পরিবার থেকে ক্রমেই একটু সরে যাওয়া। সমাজের মতো বড় পরিসরে অন্তর্ভুক্ত হওয়া। অন্যদিকে চিন্তার ভাঁজ অভিভাবকের কপালে।
স্থানভেদে বিশ্বের সব দেশের চিত্র এমনই। যুক্তরাষ্ট্রে একজন মানুষের সবচেয়ে বিপজ্জনক সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয় কৈশোরকে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না এ বয়সীরা সেখানে। বাবা-মায়ের সঙ্গে এ সময়ে কেমন সম্পর্ক থাকা উচিত? কিশোর ছেলে কিংবা মেয়েটির প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিও কেমন হওয়া উচিত?
এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাওয়া দুরূহ। দুটি পক্ষে ভাগ করা যেতে পারে তাদের। সম্পর্কের উন্নতির ব্যাপারে দুই পক্ষেরই সক্রিয় হতে হবে। একে অপরের ভুল সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। এ ধরনের আন্তঃসম্পর্ক তৈরি করতে হবে সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে। এতে থাকবে আবেগ। তবে তা হবে পরিণত। এই অবস্থায় এই নতুন সম্পর্কের মধ্যে? সাধারণত বড় ধরনের ঝড়ঝাপটা কিছুটা প্রশমিত হয়।
কৈশোরে বাবা-মায়ের সঙ্গে বেশ
দ্বন্দ্ব-সংঘাত শুরু হয়। এই সংঘাত কীভাবে মিটে যায় তা বুঝতে হলে ওই বিশেষ আন্তঃসম্পর্কটি বোঝার প্রয়োজন রয়েছে। সাধারণত এ সময়ে বাবা-মায়েরা
কিশোর-কিশোরীটির আচার-আচরণ সম্পর্কে একটি পূর্বধারণা তৈরি করে নেন এবং যখনই তারা তাদের ওই ধারণার সঙ্গে আচার-আচরণটি মেলাতে পারেন না, তখনই তর্কযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। বয়ঃসন্ধিকালের এই তর্কযুদ্ধ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এই সংঘাত সাধারণত স্থায়ী হয় মধ্যকৈশোরকাল অবধি। দেখা যায় অন্তঃকৈশোরকালে এই দ্বন্দ্ব-সংঘাতের নিরসন ঘটেছে।
এই দ্বন্দ্ব-সংঘাতগুলো সাধারণত শুরু হয় পড়ালেখা নিয়ে। বাইরে ঘোরাঘুরি, টিভি কিংবা মোবাইল ফোনের সামনে অতিরিক্ত সময় কাটানো, কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে অতিরিক্ত
সময় দেওয়ার জন্য তা হতে পারে। মন
দেওয়া-নেওয়াজনিত কারণেও হতে পারে। তবে সাংঘাতিক হয়ে ওঠে মাদকদ্রব্য নেওয়া শুরু হলে। একই সঙ্গে পোশাক-পরিচ্ছদ, রূঢ় আচরণ প্রভৃতি বিষয়েও সংঘাত শুরু হতে পারে।
বোঝা যায়, এই সম্পর্কের রাস্তায় অনেক বাধা রয়েছে। যত বেশি বাধা তত বেশি ঝাঁকুনি কিংবা হোঁচট খাবে দুই পক্ষ। এতে আন্তঃসম্পর্ক তেতো হতে পারে। একে অপরের প্রতি যুদ্ধংদেহী হয়ে উঠতে পারে। মাঝেমধ্যে রাগান্বিত হয়ে নানা অঘটন ঘটানোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে। মনোরোগের শিকার হওয়াটাও আশ্চর্যের কিছু নয়। শেষ পর্যন্ত হয়তো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাবে। তৈরি হবে বেদনাদায়ক দূরত্ব। অথচ কৈশোরে গঠনমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত হওয়া স্বাভাবিক। এর মধ্য দিয়ে সংঘাতের নিরসন হলে কিশোর-কিশোরীরা তাদের সঠিক আত্মপরিচয় আবিষ্কার করতে পারবে। নিজ ভাবনাচিন্তায় জ্ঞানাত্মক প্রক্রিয়া ব্য?বহারে কুশলী হয়ে উঠবে। যুক্তি-বুদ্ধি ও বিচারবোধে পারদর্শী হয়ে উঠবে। নিজের অহংবোধকে পরিপূর্ণ আত্মপরিচয়ে বিকশিত করতে পারবে।