চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পোশাকশিল্প। এটি অ্যাপারাল ৪.০ নামে পরিচিত। পোশাকশিল্প খাতের নানা প্রক্রিয়ায় একে ডিজিটাল রূপান্তরও বলা যেতে পারে। এটি আইওটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্যবেক্ষণ ও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে সরবরাহসহ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সেবা দিতে সক্ষম।
বৈপ্লবিক এ পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প খাতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উšে§াচিত হয়েছে। বাংলাদেশে গত বছর মজুরি সর্বোচ্চ ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পোশাকশিল্পে অধিকাংশ শ্রমিক ন্যূনতম মজুরিতে কাজ করে। ফলে এ হারে বেতন বৃদ্ধিতে এ শিল্পে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি শ্রমনির্ভর শিল্পেও সরাসরি প্রভাব পড়েছে। এ কারণে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
কম মজুরির শ্রমিকের পরিবর্তে নতুন ও ব্যয়বহুল প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প উৎপাদনকারীরা সব সময় উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে পোশাকশিল্প শ্রম মজুরি কম থাকা সত্ত্বেও সনাতন পদ্ধতির নির্ভরতা কমিয়ে তাদের উৎপাদন বাড়াতে প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিস অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ১০০ নতুন ফ্যাক্টরির কার্যক্রম শুরু হয় এবং তারা পোশাক তৈরি প্রক্রিয়ায় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এছাড়া তারা পোশাকশিল্পের সব ধরনের নিয়মকানুন সঠিকভাবে মেনে চলে। দেশে প্রায় ২৫০টি ফ্যাক্টরি সব নির্দেশনা মেনে চলার সঙ্গে সঙ্গে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছে। আধুনিক এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো উল্লেখযোগ্যহারে উৎপাদন মূল্য কমাতে সক্ষম হচ্ছে।
আধুনিক ডিজিটাল সেবাসুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছিল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোটস। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প উৎপাদনকারীদের জন্য একটি ব্র্যান্ডের আওতায় ‘একের মধ্যে সব’ ফাস্ট রিঅ্যাক্ট, জিএসডি ও থ্রেডসলের (ইন্টেলো কাট ও ইন্টেলো বাই) মতো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত সফটওয়্যার সল্যুউশন এনেছে কোটস ডিজিটাল।
পোশাকশিল্পের উন্নয়নে নকশা ও বিকাশ থেকে শুরু করে কস্টিংয়ের মাধ্যমে কাপড় কেনা, অর্ডার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন পর্যন্ত কাজ করা হলো কোটস ডিজিটালের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। পাশাপাশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত ও কার্যকরভাবে সব প্রক্রিয়া জানাতেও সাহায্য করে।
বাংলাদেশে এ প্রযুক্তির বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নিয়ে কোটস ডিজিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেইথ ফেনার বলেন, কোটস ডিজিটালের উন্নয়ন কৌশলে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। সনাতন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলেও বাংলাদেশ পোশাকশিল্পে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। অধিক উৎপাদনের জন্য বর্তমানে সনাতন প্রযুক্তির পরিবর্তে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প। উৎপাদন ব্যয় ও সময় কমাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারিক প্রয়োগের সঙ্গে শিল্পদক্ষতার সমন্বয়ে কাজ করছে কোটস ডিজিটাল।
ইপিলিয়ন, প্যাসিফিক জিনস, ডেকো ডিজাইনস, ফকির ফ্যাশন ও অনন্তসহ বাংলাদেশে ৫০টির বেশি কারখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে কোটস ডিজিটাল।