নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রাখা বেআইনি বলছেন হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানো এবং তথাকথিত নিরাপত্তার নামে হেফাজতে নেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানির সময় এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, ‘তারা তো নিরাপত্তা চায়নি। এভাবে তাদের আটক রাখা আইনবহির্ভূত। হয় তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে, আর না হয় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্টে হাজির করতে হবে।’
রিটের শুনানির সময় হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘গত কদিনের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। আমরা কেউই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছি না। পুলিশ কী আচরণ করবে, তা সিআরপিসিতে পরিষ্কার বলা আছে।’
আদালত আরও বলেন, ‘সংবিধান ও আইনে সব বিষয় লেখা আছে।
কিন্তু আমরা কেউ সংবিধান, আইন মেনে চলছি না। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা লজ্জিত।’
গতকাল শুনানি শেষ হয়েছে এবং আদালত আজ বুধবার শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন প্রীতম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী।
এর আগে গত সোমবার সকালে কোটা সংস্কারের দাবিতে কর্মসূচি পালনকালে আন্দোলনকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে রিটে কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়। জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা ও মনজুর আল মতিন। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।