কোনো অপরাধ করিনি, তাই শঙ্কিত নই: ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি কোনো অপরাধ করিনি। তাই আমি শঙ্কিত নই।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ে (দুদক) যান ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তারা। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল।

দুদকের তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রায় এক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ড. ইউনূসের কাছে সাংবাদিকরা বিস্তারিত জানতে চান। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাকে ডাকা হয়েছিল, তাই এসেছিলাম। যেহেতু এটা আইনগত বিষয়, তাই বিস্তারিত আমার আইনজীবী বলবেন।’

ইউনূসের আইনজীবী ও দুদক সূত্র জানায়, সকালে ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান দুদক কার্যালয়ে আসেন। সকাল ১০টা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেলা ১১টার দিকে দুদক কার্যালয় থেকে বের হন ড. ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তারা।

পরে ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই মামলা অবশ্যই ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি ড. ইউনূসের আইনজীবী হিসেবে ভেতরে (দুদক কার্যালয়ে) গিয়েছিলাম এবং আমি আইনের সব ব্যাখ্যা ওইখানে দিয়েছি।

তারা (দুদক) বলেছেন, ওই সমঝোতা চুক্তিটি জাল। আমি বলেছি, আপনারা জাল বলতে পারেন না। কারণ দুই পক্ষের সমঝোতা যখন হয়, তখন আর সেটা জাল থাকে না। এটা হাইকোর্টের অনুমোদন পাওয়া, সুতরাং এটা জাল নয়। ওই চুক্তিতে ছিল, শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে সাত দিনের মধ্যে অ্যাকাউন্ট করতে হবে। সাত দিনের মধ্যে আমরা  অ্যাকাউন্ট করেছি। হ্যাঁ, আমরা টেলিফোনে অনুমতি নিয়েছি, কারণ সবাই একসঙ্গে থাকে না। আমরা ৯ তারিখের জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে সবার অনুমতি নিয়েছি।

দুদক বলেছে, আপনারা অনুমতিটা পরে নিয়েছেন। আমি বলেছি, দেরি হওয়ার ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তাহলে এটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’

গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় গত বুধবার প্রতিষ্ঠানটির তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। এ কর্মকর্তারা হলেনÑগ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক নাজনীন সুলতানা, নূরজাহান বেগম ও হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

এর আগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সংশ্লিষ্ট ১৩ জনকে তলব করে দুদক। তাদের দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে নোটিশ দেয় সংস্থাটি। গত ৩০ মে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনকে আসামি করে মামলাটি করে দুদক। মামলায় ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়।

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেনÑপ্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী। এ ছাড়া আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী, আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মাইনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০